ইন্টারনেটে ইসলাম প্রচারের কিছু টিপস
041.033 وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلا مِمَّنْ دَعَا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ "যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন আজ্ঞাবহ, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?" (৪১:৩৩)এক:- ইন্টারনেট আবিষ্কৃত হয়ে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে এক যুগের বেশি সময় ধরে। তথ্য-প্রযুক্তির দ্রুত আদান প্রদানের মাধ্যম হিসেবে এর জনপ্রিয়তা এখন শীর্ষে। ইন্টারনেট মিডিয়াই একমাত্র মিডিয়া যেখানে লেখক ও পাঠকের মধ্যে সরাসরি তাৎক্ষণিক অনুভূতির আদান-প্রদান সম্ভব। ফলে, সর্বস্তরের মানুষের কাছে, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে ইন্টারনেট মিডিয়াই এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় মিডিয়া। মিডিয়া সবসময়ই দুই পক্ষের মাঝে মাধ্যম
হিসেবে কাজ করে। প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বা ওয়েব মিডিয়া -সবকটির ক্ষেত্রে একই কথা। দুই পক্ষের প্রথম পক্ষ লেখক, প্রেরক বা উপস্থাপক। আর দ্বিতীয় পক্ষ পাঠক বা প্রাপক। প্রথম পক্ষ এটাকে যেভাবে কাজে লাগাতে চায়, দ্বিতীয় পক্ষের কাছে তা সেভাবেই কাজ করে। প্রথম পক্ষ যদি একে মানবতা ও নৈতিকতার পক্ষে কাজে লাগাতে চায়, দ্বিতীয় পক্ষের কাছে সে কাজটিই তুলে ধরে মিডিয়া। আবার প্রথম পক্ষ যদি একে অশ্লীলতা ও নোংড়ামির পক্ষে কাজে লাগাতে চায়, দ্বিতীয় পক্ষের কাছে মিডিয়া তা-ই তুলে ধরে। কাজেই মিডিয়া একটি নিরীহ বিষয়। যে যেভাবে তাকে ব্যবহার করতে চায়, সে নিঃসংকোচে নিজেকে সেভাবেই ব্যবহৃত হতে দেয়। এ বিবেচনায় মিডিয়াকে নিরপেক্ষ বললেও খুব বেশি বলা হবে না মনে করি। তবে প্রথম পক্ষের চিন্তা-চেতনার প্রতিফলনই যে মিডিয়া ঘটায়, তা সুস্পষ্ট। দ্বিতীয় পক্ষের চিন্তা-চেতনার বিবেচনা মিডিয়া করে না, তা করা মিডিয়ার দায়িত্বও নয়। বরং, সে দায়িত্ব অর্পিত প্রথম পক্ষের ওপর। প্রথম পক্ষ এখানে দ্বিতীয় পক্ষের চিন্তা-চেতনার বিবেচনা করবে, নাকি নিজেদের চিন্তা-চেতনা দ্বিতীয় পক্ষের ওপর চাপিয়ে দিবে, তা একান্তই প্রথম পক্ষের নিজস্ব ব্যাপার। অবশ্য দ্বিতীয় ক্ষেত্রে প্রথম পক্ষকে স্বার্থপর ছাড়া আর কি-ই-বা বলার থাকে! যদি বলা হয়, আমাদের মিডিয়াগুলোতে দ্বিতীয় পক্ষের চিন্তা-চেতনার প্রতিফলন ঘটে, তাহলে এও বলতে হয়, দ্বিতীয় পক্ষ তথা পুরো পাঠকসমাজ (বা অধিকাংশ) অন্যায়-অশ্লীলতাকে প্রশ্রয় দিতে বিশ্বাসী; যা অবাস্তব বৈ কী! আবার যদি বলি, তা প্রথম পক্ষের অন্ধ সমর্থন করে, তাও পুরোপুরি সঠিক হয় না। তাহলে কী বলতে পারি আমরা? এ প্রশ্নের উত্তর অনেকটা এমন হতে পারে যে, মিডিয়া প্রথম পক্ষের দ্বারা ব্যবহৃত হয়, তার পক্ষাবলম্বন করে না। সারকথা, মিডিয়া কোনো খারাপ বস্তু নয় যে একে ছুঁড়ে ফেলতে হবে। মিডিয়া কেবল প্রচার মাধ্যম, যে যেভাবে একে যে কাজের প্রচারে লাগায়, সে সেভাবেই সে কাজের প্রচারনায় ব্যবহৃত হয়। এ কথা যেভাবে প্রিন্ট মিডিয়ার ক্ষেত্রে সত্য, তেমনি ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও ওয়েব মিডিয়ার ক্ষেত্রেও সত্য।
দুই. ওয়েব মিডিয়ায় মুসলমানদের অবস্থান খুব দুর্বল। বিশেষ করে নৈতিকতার চর্চা এখানে খুবই নগন্য। অমুসলিম ও ইয়াহুদীদের সাইট মুসলমানদের সাইটের তুলনায় ১২০০ গুণ বেশি, সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমনটিই দেখা যায়। অশ্লীলতা ও নীল ছবির সয়লাব এত বেশি যে অল্প কিছু মুসলিম সাইটের অবস্থান সে তুলনায় অনুল্লেখযোগ্য। উদাহরণ স্বরুপ গুগল ডট কম ডট বিডির কথা ধরা যাক। বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য গুগলের এই সংস্করণ। এখানে সম্প্রতি গুগলের নতুন একটি ফিচার যুক্ত হয়েছে। যার ফলে একটি অক্ষর টাইপ করার সঙ্গে সঙ্গে সেই অক্ষর দ্বারা শুরু হওয়া শব্দগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা বেশি সার্চ হওয়া (খোঁজ করা) ১০ টি শব্দের লিস্ট চলে আসে। রুচিশীল ব্যক্তিমাত্রই এ লিস্ট দেখে বমি করতে বাধ্য হবেন। কীবোর্ডের একটি অক্ষরও এমন নেই যা টাইপ করলে কোনো ভালো শব্দের লিস্ট আসে। এর অর্থ কী? এর অর্থ হলো, বাংলা ভাষায় গুগলে অশ্লীল শব্দই বেশি সার্চ করা হয়। এ থেকে আমরা বাঙালী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সামগ্রিক একটা চিত্র অনুমান করতে পারে। কিন্তু এই অধপতনের কারণ কী? কেউ কেউ বলেন, এর কারণ হলো, ব্যবহারকারীদের রুচিবিকৃতি বা রুচিবিকৃত ব্যবহারকারীদের আধিক্য। কিন্তু আমার মত হলো, এর কারণ, পর্যাপ্ত পরিমাণ ভালো সাইটের অনুপস্থিতি। কাজেই, ভালো সাইটের আধিক্য বা স্বল্প সংখ্যক ভালো সাইটের অত্যধিক প্রচারই কেবল আমাদেরকে এই অধপতন থেকে রক্ষা করতে পারে।
তিন. ইসলাম বরাবর সৎ কাজের দিকে মানুষকে আহ্বান করার প্রতি উৎসাহ দিয়ে আসছে। রাসূল সা. বলেন, من دعا إلى هدى كان له من الأجر مثل أجور من تبعه لا ينقص ذلك من أجورهم شيئا ومن دعا إلى ضلالة كان عليه من الإثم مثل آثام من تبعه لا ينقص ذلك من آثامهم شيئا
“যে ব্যক্তি মানুষকে কোনো ভালো কাজের দিকে আহ্বান করে, তাকে তার অনুসারীর ভালো কাজের সমান সওয়াব দেয়া হয়; অথচ ঐ ব্যক্তির সওয়াবও কোনো অংশে কমে না। আর যে ব্যক্তি কোনো খারাপ কাজের দিকে মানুষকে আহ্বান করে, তার ওপর তার অনুসারীর খারাপ কাজটির সমান গুনাহ দেয়া হয়। অথচ তার অনুসারীর পাপের অংশও এতটুকু কমে না।” (মুসলিম:৬৯৮০, তিরমিযী:২৬৭৪, ইবনে মাজাহ:২০৬)
তিনি আরো বলেন, فوالله لأن يهدى بك رجل واحد خير لك من حمر النعم ..”
আল্লাহর শপথ! তোমার মাধ্যমে একটি লোকও যদি হিদায়াত লাভ করে, তবু তা লাল উটনীর চেয়েও উত্তম।”
(লাল উটনী তৎকালীন সময়ে মানুষের অত্যন্ত প্রিয় ছিল। এ দিয়ে যে কোনো প্রিয় বস্তু বোঝানো হয়েছে) – (বুখারী:২৭৮৩) আল্লাহ তায়ালা বলেন, وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ ۚ يَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَيُطِيعُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ ۚ أُولَٰئِكَ سَيَرْحَمُهُمُ اللَّهُ ۗ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
আর ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের সহায়ক। তারা ভাল কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ থেকে বিরত রাখে। নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে। এদেরই উপর আল্লাহ তা’আলা দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশীল, সুকৌশলী। (৯:৭১)
তিনি আরো বলেন, وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِمَّنْ دَعَا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ “যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন আজ্ঞাবহ, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?” (৪১:৩৩)
বাস্তব জগতে মানুষকে ভালো কাজের উৎসাহ দেয়া যেমন গুরুত্বপূর্ণ, ওয়েব জগতে সেই গুরুত্ব আরো বেশি। বর্তমান প্রজন্মের কমিউনিটিগুলো গড়ে উঠছে ওয়েব জগতেই। তাদের ভালো কাজ ও খারাপ কাজগুলো ওয়েবকেন্দ্রিকই হয়ে থাকে। অন্তত, ভালো বা খারাপ কাজের প্রেরণা তারা ওয়েব থেকেই পেয়ে থাকে, এ কথা তো বলাই যায়। উল্লিখিত আয়াত ও হাদীসের নির্দেশনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্র বর্তমানে ওয়েব জগতও। ভার্চুয়ালি হলেও এখানকার মানুষজনের কার্যক্রম খুব এ্যাফেকটিভ হয়ে থাকে। এ জগতের উৎসাহ-প্রেরণায় বাস্তব জগতে তারা ভালো বা খারাপ কিছু করে থাকে। কাজেই, এ জগতের বাসিন্দাদের ভালো কাজের পরামর্শ দেয়া ও খারাপ কাজ থেকে সতর্ক করা ওলামায়ে কিরাম ও সর্বস্তরের ইসলামপ্রিয় মানুষের অপরিহার্য দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। ওয়েব মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে আমরা ইসলামের দিকে মানুষকে আহ্বান করতে পারি: ওয়েব মিডিয়ায় আমাদের কীরূপ ভূমিকা হওয়া উচিৎ, কীভাবে ওয়েব মিডিয়ায় ইসলামের দাওয়াতের কাজে অংশগ্রহণ করতে পারি, নিম্নে সে সম্পর্কিত কিছু টিপস দেয়া হলো।
ওলামায়ে কেরামের প্রতি:
যাদের মাদ্রাসা আছে (মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল/কার্যকরী কমিটির সদস্য): ১. মাদ্রাসার ওয়েবসাইট করে সেখানে মাদ্রাসার সব ইনফরমেশন রাখা যেতে পারে। মাদ্রাসায় পড়া কেন প্রয়োজন, এতে দেশ ও মানবতার কীরূপ সেবা হয়, এ ধরনের প্রবন্ধ-নিবন্ধ তাতে থাকতে পারে। ২. মাদ্রাসার সকল শিক্ষককে প্রতি মাসে/দুই মাসে ন্যূনতম একটি করে ছোট গবেষণামূলক প্রবন্ধ লিখতে বলা হবে। সেগুলো দায়িত্বশীল কারো সম্পাদনার পর ইন্টারনেটে মাদ্রাসার ওয়েবসাইটে দিয়ে দেয়া হবে। ৩. মাদ্রাসার ছাত্ররা যে ত্রৈমাসিক দেয়াল পত্রিকা প্রকাশ করে থাকে, সেগুলো মাদ্রাসর ওয়েবসাইটে দিয়ে দেয়া হবে। ৪. মাদ্রাসার কার্যক্রম, সিলেবাস, বার্ষিক মাহফিল ইত্যাদি সবকিছু ওয়েবসাইটে থাকবে। মাদ্রাসাগুলোর সিলেবাস সহজলভ্য না হওয়ার কারণে এর শিক্ষাপদ্ধতি মানুষের কাছে অনেকটাই অস্পষ্ট। যার কারণে ভুল বুঝাবুঝি বেশি হয়ে থাকে। ৫. মাহফিল ও ইসলাহী মজলিসে বক্তাদের বক্তব্য ও আলোচনা ওয়েবসাইটে দেয়া হবে। ৬. ওয়েবসাইটে প্রশ্ন করার অপশন থাকবে। যেন পাঠক/ভিজিটর সহজেই প্রশ্ন করতে পারেন এবং যে কোনো বিষয়ে ইসলামী সমাধান পেয়ে যেতে পারেন। উল্লেখ্য যে, এখন এই বিশ্বগ্রামের (Global Village, Internet) মানুষের কাছ থেকে মাদ্রাসায় গিয়ে স্কলারদের কাছে ইসলামী সমাধান চাওয়ার কল্পনা করা প্রায় অবাস্তব। মানুষ এখন মাউসের ক্লিকে সবকিছু করতে অভ্যস্ত। কাজেই ইসলামী সমাধান পাওয়াও তাদের কাছে সহজ করে দেয়া এখন সময়ের দাবী।
লেখক: ১. নিজের লিখিত প্রবন্ধ, যেগুলো বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলো ব্যক্তিগত সাইটে প্রকাশ করা যেতে পারে। ২. ছোট ছোট অনুভূতি, দৈনন্দিন ডায়েরী বা অপ্রকাশিত ইসলামী লেখাগুলো সাইটে দেয়া যেতে পারে। ৩. প্রকাশিত বইগুলোর ভূমিকা, সূচি, প্রাপ্তিস্থান ইত্যাদি সাইটে দেয়া যেতে পারে। যেন ভিজিটর চাইলে সহজেই বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। সম্ভব হলে আপনার সাইটের মাধ্যমে সরাসরি বই বিক্রয়ের ব্যবস্থাও করতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি বিনামূল্যে বই পড়ার সুযোগ করে দেন। উল্লেখ্য, লেখকদের প্রকাশিত বইগুলো দেশের মানুষের কাছেই সবখানে পৌঁছে না। আর যারা বিদেশে আছেন, তাদের কাছে পৌঁছানোও অনেক সময় সম্ভব হয় না। কাজেই ওয়েবে ভিজিটররা বই ফ্রী পড়তে পারলে ক্ষতি তো হবেই না, বরং, বই ভালো লাগলে পাঠক তা নিশ্চয় কিনে পড়বেন। সবচেয়ে বড় কথা, ইসলামের অনেক বড় খিদমত হবে, যা নি:সন্দেহে যে কোনো ইসলামী লেখকের প্রথম বাসনা হওয়া উচিৎ। ৩. মন্তব্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে পাঠক ও ভিজিটরদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করা যেতে পারে। এতে মানুষ ইসলামী লেখাগুলোকে কীভাবে মূল্যায়ন করে, বা কীভাবে তাদের কাছে লেখাগুলো এলে তারা বেশি উপকৃত হয় -এ সম্পর্কে একটা অভিজ্ঞতা অর্জন হবে। উল্লেখ্য, আমাদের ইসলামী লেখাগুলোকে অনেকেই সমাজবিচ্ছিন্ন লেখা বলে থাকেন। এর কারণ, সমাজের মানুষের চাহিদা, তাদের অনুভূতি লেখকরা অনেকাংশেই জানেন না বা বুঝেন না। ওয়েবে লিখলে মন্তব্যের মাধ্যমে পাঠক লেখকের ভুল ধরিয়ে দেন। লেখক পাঠকের কোনো অনুভূতিতে আঘাত দিলে সঙ্গে সঙ্গে পাঠক তা জানিয়ে দেন। সাধারণ থেকে সাধারণ পাঠকও নিজের মতামত প্রকাশ করতে পারেন। যা নি:সন্দেহে যে কোনো লেখকের জন্য একটি বড় অভিজ্ঞতা।
ইসলামী বই প্রকাশক: ১. প্রকাশনার একটি নিজস্ব সাইট থাকতে পারে। সেখানে প্রকাশিত সব বই এর প্রচ্ছদ, ভূমিকা, সূচি, মূল্য ও প্রাপ্তিস্থান উল্লেখ করা যেতে পারে। ২. নতুন নতুন বইয়ের সংবাদ ও রিভিউ প্রকাশ করা যেতে পারে। এতে প্রকাশক ও পাঠক উভয়েরই লাভ। ৩. ই-কমার্সের মাধ্যমে সহজে বই বিক্রয় করা যেতে পারে। এতে লেখক, প্রকাশক ও পাঠক -সকলেরই লাভ। উল্লেখ্য, পৃথিবীর অনেক দেশেই ইসলামী প্রকাশনাগুলো এখন ই-কমার্সের দিকে ঝুকছে। ফলে, পৃথিবীর এক প্রান্তের বই অন্য প্রান্তে বিক্রয় করা এখন একটি মাউসের ক্লিকেই সম্ভব। পিছিয়ে আছে কেবল বাঙালীরা।
আলেম বক্তা/খতীব: ১. নিজের নামে ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট খুলতে পারেন। ভেবে দেখার বিষয়, এটা বিনয়ের পরিপন্থী নয়, বরং, দাওয়াতের একটা বড় মাধ্যম। (Sultan.org/a/ থেকে علماء و دعاة অংশে আরব আলেমদের ব্যক্তিগত সাইটগুলো দেখতে পারেন।) উল্লেখ্য, (যারা মিডিয়ায় অংশগ্রহণকে বিনয়ের পরিপন্থী মনে করেন, তাদের প্রতি সবিনয়ে বলছি,) জুমার খুতবাও একটি মিডিয়া। ওয়াজ মাহফিলও একটি মিডিয়া। অতএব ওয়াজের মাঠে ওয়াজ করা যদি বিনয়ের পরিপন্থী না হয়, প্রিন্ট-ইলেক্ট্রনিক বা ওয়েব মিডিয়ায় অংশগ্রহণও বিনয়ের পরিপন্থী না হওয়ার কথা। মিডিয়া অর্থ মাধ্যম। প্রচার মাধ্যম। জুমার খুতবা, ওয়াজ ইত্যাদির উদ্দেশ্যও প্রচার। ইসলাম প্রচার। তাহলে এতদুভয়ের মাঝে ফারাকটা কি খুব বড়? বরং, জুমার একটি খুতবা বা ওয়াজের একটি মাহফিল -এর মাধ্যমে যতগুলো মানুষের কাছে ইসলাম প্রচার করা যাবে, তার চেয়ে বহু গুন বেশি প্রচার সম্ভব আধুনিক মিডিয়ার মাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে সত্যিই ভাবা প্রয়োজন। ২. ব্যক্তিগত সাইটে নিজের ওয়াজ, জুমার বয়ান ইত্যাদির অডিও রাখতে পারেন। ৩. নিজের প্রবন্ধ-নিবন্ধ রাখতে পারেন। ৪. দৈনন্দিন ঘটে যাওয়া বিষয়গুলোর নানা ইসলামী দিক তুলে ধরে ব্লগ লিখতে পারেন। ৫. পাঠক যেন আপনার কাছে প্রশ্ন করতে পারে, সে অপশন রাখতে পারেন।
ইসলামী পত্রিকা: বাস্তবতা হলো, নতুন প্রজন্মের পাঠক প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতি ক্রমেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। মাউসের ক্লিকে সবকিছু করতে অভ্যস্ত এ প্রজন্মের কাছে ইসলামের বাণী পৌঁছে দিতে হলে প্রিন্ট মিডিয়ার পাশাপাশি ওয়েব মিডিয়াতেও সরব অংশগ্রহণ প্রয়োজন। এজন্য ইসলামী পত্রিকাগুলোকে পূর্বাপর সকল সংখ্যাসহ ওয়েব সাইটে প্রকাশ করতে অনুরোধ করছি। যেন পাঠক যে কোনো বিষয়ে ইন্টারনেটে খুঁজলে তার ইসলামী সমাধান পেয়ে যেতে পারে। ছাত্র ও অন্যান্য জনসাধারণ: উপরে উল্লিখিত কিছু বিশেষ পয়েন্ট ছাড়া সর্বস্তরের ইসলামপ্রিয় ভাই-বোনেরা ইন্টারনেটে ইসলামের দিকে মানুষকে আহ্বান করার কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারেন। এটা হতে পারে বিভিন্ন ভাবে :
কমিউনিটি ব্লগ ও ফোরামের মাধ্যমে : ১. বিভিন্ন ইসলামী সাইটের এ্যাড্রেস ও এর বিভিন্ন কন্টেন্ট নিয়ে লেখা। ২. বিভিন্ন ইসলামী আর্টিকেল সূত্রসহ প্রকাশ করা। ৩. সময়মত বিভিন্ন বিষয়ে ইসলামী লিংক কালেকশন প্রকাশ করা। যেমন হজ্জ্বের মৌসুমে হজ্জ্ব বিষয়ক লিংক কালেক্ট করে সংকলন প্রকাশ করা। বা, রোজার সময় রোজা সংশ্লিষ্ট লিংক প্রকাশ করা। বা, নবীজীর স. জীবনীবিষয়ক লেখার লিংক সমগ্র প্রকাশ করা। ৪. ইসলাম নিয়ে লিখেন, এমন লেখককে উৎসাহ দেয়া। ৫. কোনো লেখক কোনো ভাবে ইসলামকে কটাক্ষ করে থাকলে প্রজ্ঞার মাধ্যমে মন্তব্যে তাকে বোঝানো। ৬. বিদাত বা যে কোনো ভুল ভ্রান্তি সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। ৭. বিভিন্ন আয়াত ও হাদীস প্রকাশ করে মানুষকে পাপ ও সওয়াব সম্পর্কে সচেতন করা। ৮. ব্লগারদের মধ্যে ঝগড়া হতে দেখলে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে তা নিরসন করা। ৯. কোনো ভালো কাজের ব্যাপারে জানা থাকলে মানুষকে তা জানানো। ১০. কেউ সাহায্য চাইলে তাকে সাহায্য করা। যেমন কারো রক্তের প্রয়োজন হলে, তাকে নিয়ে লেখা। ১১. কোনো ভিত্তিহীন মিথ্যা সংবাদ পরিবেশিত হলে প্রমাণ সাপেক্ষে তার খন্ডন প্রকাশ করা। ১২. বিভিন্ন ইসলামী সফটওয়্যার নিয়ে রিভিউ লেখা ও লিংক শেয়ার করা। ১৩. বিভিন্ন ইসলামী বই নিয়ে রিভিউ লেখা। এবং স্বত্ত উন্মুক্ত হলে তার পিডিএফ আপলোড করে লিংক শেয়ার করা।
সোশাল কমিউনিটি সাইটের মাধ্যমে: ১. ফেসবুকে বেশি বেশি ইসলামী গ্রুপ খুলে বন্ধু বান্ধবকে আহ্বান করা। ২. ইসলামী সাইট, আর্টিকেল, অডিও ও ভিডিও লিংক বেশি বেশি শেয়ার করা। ৩. ফেসবুক ও টুইটারে বেশি বেশি ইসলামী স্ট্যাটাস দেয়া। ৪. কুরআনের আয়াত, হাদীস বা স্কলারদের উক্তি স্ট্যাটাসে দেয়া। ৫. ইসলামী সাইটের ফ্যান পেজ খুলে মানুষকে আহ্বান করা। ৬. ইসলামী নোট লিখে বন্ধু-বান্ধবকে ট্যাগ করা।
ই-মেইল গ্রুপের মাধ্যমে: ১. ইয়াহু গ্রুপস -এ ইসলামী গ্রুপ খুলে ইসলামী আর্টিকেল পাঠানো। ২. গুগল গ্রুপস -এ ইসলামী গ্রুপ খোলা। Ranking ভালো এমন সাইটে ইসলামী সাইটের প্রচার করা: ব্লগার ডট কম, ইউটিউব, ফেসবুক, ওয়ার্ডপ্রেস ইত্যাদি যেসব সাইটের র্যাংকিং ভালো, সেগুলোতে যতবেশি সম্ভব ব্লগ লিখে বা লিংক শেয়ার করে ইসলামী সাইটের প্রচার করা। বেশি ব্যবহৃত হয় এমন বুকমার্ক টুলে ইসলামী সাইট বুকমার্ক করা : ডেলিসিয়াস, এক্সমার্কসসহ বেশি ব্যবহৃত হয় এমন বুকমার্কিং টুল দিয়ে ইসলামী সাইটগুলোকে বুকমার্ক করলে সেগুলো অন্যান্য ভিজিটরের কাছেও দেখানো হয়। ফলে বড়ো রকম মার্কেটিং হয়।
রিডার/ফীড ইত্যাদিতে সাবস্ক্রাইব করা: গুগল রিডার, ফীডবার্ণার ইত্যাদির মাধ্যমে বিভিন্ন ইসলামী সাইটের আর.এস.এস ফীডে সাবস্ক্রাইব করা। এসব টুল দিয়ে সাব্সক্রাইব করা হলে অন্য ভিজিটরের কাছেও তা উপস্থাপিত হয়। অডিও, ভিডিও শেয়ারিং সাইটের মাধ্যমে : ইউটিউব, ইস্নিপ্স সহ জনপ্রিয় অডিও ভিডিও শেয়ারিং সাইটে ইসলামী অডিও ভিডিও শেয়ার করলে সহজে খুব দ্রুত তা মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। এ ক্ষেত্রে যা খুব বেশি প্রয়োজন, তা হলো, ফাইলের নাম ও সংক্ষিপ্ত বিবরণটা যেন খুব অর্থপূর্ণ হয়, সে দিকে লক্ষ্য রাখা। সাধারণত নাম ও বিবরণ পড়েই একজন ভিজিটর অডিও শুনেন বা ভিডিও দেখেন।
টেক্সট ও অডিও চ্যাটের মাধ্যমে: বিভিন্ন চ্যাটরুম গুলোতে ইসলাম প্রচার করা যেতে পারে। ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে প্রজ্ঞাকে কাজে লাগাতে হবে। যখন যে বিষয়টি সামনে আসে, সে বিষয় সম্পর্কিত ইসলামী দিক-নির্দেশনা প্রকাশ করা অনেক কার্যকর হয়ে থাকে।
ইসলামী মাহফিল বা আলোচনা সভার সরাসরি সম্প্রচার ও অডিও আপলোড: বিভিন্ন ইসলামী আলোচনা সভা বা তাফসীর মাহফিল সরাসরি সম্প্রচার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে পলটক বা ইউস্ট্রীম ভালো সহযোগিতা করতে পারে। এরপর মাহফিল শেষ হলে তা ইস্নিপ্স বা অন্য কোথাও আপলোড করে লিংক শেয়ার করা যেতে পারে।
ধনী ও সম্পদশালী শ্রেণীর ইসলামের খিদমত : এমন অনেক মানুষের কথা শোনা যায়, যারা ইসলামের জন্য কিছু করে যেতে চান। রাসূল স. বলেছেন, إذا مات الإنسان انقطع عمله إلا من ثلاث صدقة جارية وعلم ينتفع به وولد صالح يدعو له মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করে, তখন তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়। তবে তিনটি আমল মৃত্যুর পরও বাকী থাকে (এবং এগুলোর সওয়াব আমলকারীকে পৌঁছানো হয়।)
১. সাদাকায়ে জারিয়া (এমন সাদাকা বা দান, যার সুফল অব্যাহত থাকে। যেমন, কোনো চাপকল দান করা বা পুকুর খনন করা, যার সুফল যুগ যুগ ধরে মানুষ পেয়ে থাকে, ফলে সওয়াবও অব্যাহত থাকে।)
২. উপকারী জ্ঞান (মানুষের কাছে উপকারী জ্ঞান বিলিয়ে যাওয়া, যার ফলে মৃত্যুর পরও তার জ্ঞানের মাধ্যমে অন্য মানুষের উপকার অব্যাহত থাকে।)
৩. সৎ সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করবে। (তিরমিযী:১৩৭৬)
এই হাদীসটির মূল বক্তব্য হলো, মৃত্যুর পর মূলত মানুষের সওয়াব অর্জনের সব পথ বন্ধ হয়ে যায়। তবে এমন কিছু যদি করে যাওয়া হয়, যার কারণে অন্যের উপকার হয়, সওয়াব লাভের কারণ হয়, তাহলে মৃত্যুর পরও সওয়াব অব্যাহত থাকে। যেমন কেউ মসজিদে কুরআন শরীফ দিল, যতদিন কুরআন শরীফটি পড়া হবে, ততদিন সে সওয়াব পেতে থাকবে। এই হাদীসের ভিত্তিতে অনেকে মৃত্যুর পরের পাথেয় তৈরির জন্য ইসলামের বড় কোনো খিদমত করে যেতে চান। নানাজন নানাভাবে এ খিদমতে অংশগ্রহণ করেন। তবে বর্তমানে টেকনোলজিতে ইসলামের খিদমত করলে সেটা বড় রকম খিদমত হবে বলে মনে করি। নিম্নে বাংলা ভাষায় কয়েক ধরনের ইসলামের খিদমতের বিবরণ দেয়া হলো:
শক্তিশালী ওয়েবসাইট নির্মাণ: বিভিন্ন ভাষায় অমুসলিম, নও মুসলিম ও সাধারণ মুসলিমদের জন্য প্রচুর পরিমাণ আর্টিকেল সমৃদ্ধ সাইট রয়েছে। বাংলায় এর বড়ো অভাব। বিশেষ করে এ ভাষায় এ্যাথিস্টদের অবদান বেড়ে যাওয়ায় অভাবটা বেশি অনুভূত হচ্ছে। কাজেই এমন একটি শক্তিশালী সাইটের খুব প্রয়োজন, যাতে মানুষ মুসলমান হওয়ার পূর্বে, মুসলমান হওয়ার পর প্রাথমিক স্টেজে ও সাধারণ মুসলিম হিসেবে যে সকল সন্দেহ ও সমস্যায় পতিত হয়, সেগুলো সম্পর্কে বিস্তর আলোচনা থাকবে। উল্লেখ্য যে, বাংলা ভাষায় এ্যাথিস্টরা যা লিখেন, তার সবগুলোরই উত্তর দেয়া সম্ভব। বরং, অনেকগুলো তো উত্তর দেয়ারই যোগ্য না। অনেকে বিচ্ছিন্ন ভাবে উত্তর দিচ্ছেন, লিখছেন। কিন্তু এখানে প্রয়োজন শক্তিশালী টিমওয়ার্কের, যার অভাব খুব বেশি। এর কারণ কিন্তু এ নয় যে, যোগ্য উত্তরদাতা আমাদের নেই। বরং, এর কারণ উত্তরদাতাদের মাঝে সমন্বয়হীনতা, বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে নতুন উত্তরদাতার অনুপস্থিতি। যা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আর্থিক দৈন্যতা ও সময়ের অভাবে হয়ে থাকে। যদি বড় বাজেটে এমন সাইট করার উদ্যোগ কেউ নেন, যার জন্য দিনরাত একদল গবেষক ও লেখক পরিশ্রম করে যাবেন, তাহলে নি:সন্দেহে তা একটি বিশাল খিদমত হবে। এবং আমার ক্ষুদ্র দৃষ্টিতে এ যুগে এটাই সবচেয়ে বড় সাদাকায়ে জারিয়া হবে (হাদীসের ভাষ্যমতে যার সওয়াব মৃত্যুর পরেও জারী থাকবে।) সফটওয়্যার/ওয়েব এ্যাপ্লিকেশন নির্মাণ: বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় মুসলিম ডোনাররা ইসলামী বইগুলোকে ডিজিটাল করার উদ্যোগ নিচ্ছেন। যদিও অন্য ধর্মাবলম্বীদের তৎপরতার তুলনায় মুসলমানদের অবস্থান খুবই দুর্বল। আর বাংলা ভাষায় তো তা নেই বললেই চলে। এর অনেকগুলো কারণ হতে পারে। উদ্যোক্তার অভাবও এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। তারপরও যদি কোনো ইসলামপ্রিয় ব্যক্তি এরকম একটি প্রজেক্টের জন্য এগিয়ে আসেন, নি:সন্দেহে তা বাংলা ভাষায় ইসলামের অনেক বড় খিদমত বলে আল্লাহর কাছে গণ্য হবে ইনশা’আল্লাহ। এ প্রজেক্টের মাধ্যমে বাংলা ভাষা রচিত, অনূদিত ইসলামী বইগুলোকে ডিজিটাল করা হবে। কম্পোজকৃত টেক্সট ওয়েব এ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ইন্টারনেটে নির্দিষ্ট সাইটে আপলোড করা হবে। লেখক ও বইয়ের তালিকা হিসেবে বইয়ের সূচি থাকবে। যে কোনো বই ফ্রী পড়ার সুযোগ থাকবে। সাধারণ পাঠক থেকে শুরু করে লেখক, বুদ্ধিজীবী, গবেষক সবাই এখানে নিজ নিজ গবেষণা চালিয়ে যেতে পারবেন। এ প্রজেক্টকে সফল করতে প্রয়োজনে বইগুলোর ওয়েব সত্ত্ব কিনে নেয়া যেতে পারে। পরে তা সর্ব সাধারণ মুসলমানদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। প্রজেক্টটার নাম দেয়া যেতে পারে BIE Library (Bengali Islamic Electronic Library). (আরো আইডিয়া পরবর্তীতে যুক্ত হবে।)
ইসলামী সাইটের স্বত্ত্বাধারীদের সাথে ইসলামের দাওয়াতে কন্ট্রিবিউট করা: আমরা অনেক ইসলামী সাইট ভিজিট করি, যার থেকে আমরা উপকৃত হই। কিন্তু কখনো কি আমরা সাইট ওনারদেরকে দু’চারটি কথা লিখে উৎসাহ দিই? আমরা বিভিন্ন উপায়ে ইসলামী সাইট ওনারদের সহযোগিতা করতে পারি। ১. সাইটের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সাইট ওনারের কাছে উৎসাহ ব্যঞ্জক ই-মেইল করা। ২. একটু সময় ব্যয় করে সাইটের কোনো ভুল-ত্রুটি থাকলে তা ধরিয়ে দেয়া, এবং কোনো ভালো পরামর্শ থাকলে তা প্রকাশ করা। ৩. অনেকে মনে করেন, ইসলামের দাওয়াত দেয়ার জন্য প্রত্যেকের নিজস্ব সাইট থাকতেই হবে। এটা ভুল। বরং, এখন যেসব সাইট আছে, সেগুলোতে সাধ্যমত কন্ট্রিবিউট করতে পারি আমরা। যেমন, ইসলামী ফোরাম হলে, তা জমিয়ে রাখা। ইসলামী ব্লগ হলে, তাতে লেখা দেয়া। বা অন্য যে কোনো উপায়ে সহযোগিতা করা। ৪. বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনের সাথে ইসলামী সাইটের লিংক শেয়ার করা। অনেক ইসলামী সাইট আছে যাদের মার্কেটিং দুর্বল হওয়ার কারণে ভিজিটর সংখ্যা খুবই নগন্য। এসব সাইটের মার্কেটিং করাও অনেক বড়ো খিদমত হতে পারে। ৫. ইসলামী সাইটগুলো ঠিকমতো চলার জন্য এ্যাড সংগ্রহ করে দেয়া। কিংবা, ফেসবুক বা গুগলের মতো সাইটে এ্যাড দেয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া। ৬. ই-মেইলের সিগনেচারে বা বিভিন্ন সাইটে নিজের পেইজে ইসলামী সাইটের লিংক রাখা। ঘরে-বাইরে বা নিজের লাইব্রেরীতে ইসলামী সাইটের নামসমৃদ্ধ স্টিকার লাগানো। এছাড়া আরো বিভিন্নভাবে ইন্টারনেটে ইসলাম প্রচার করা যেতে পারে। আমরা যে যেখানে যেই অবস্থায় আছি, সেই অবস্থায়ই এই মহান কাজের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারি। যে কোনো কাজে একাকী প্রচেষ্টার চেয়ে টিমওয়ার্ক বেশি কার্যকরী। ইসলামের দাওয়াতের কাজেও কয়েকজন মিলে গ্রুপ করে নিলে কাজটা বেশি সুন্দর ও অর্থপূর্ণ হয়। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দিন। আমীন। এই পোষ্টটি আরো আপডেট করা হবে। আরো কোনো আইডিয়া থাকলে মন্তব্যের ঘরে তা শেয়ার করতে পারেন। আল্লাহ সকলকে উত্তম প্রতিদান দিন। আমীন।
No comments:
Post a Comment