দর্শক সংখ্যা

Showing posts with label সিয়াম বা রোজা. Show all posts
Showing posts with label সিয়াম বা রোজা. Show all posts

Wednesday, March 20, 2013

সিয়াম ও রমজান : শিক্ষা-তাৎপর্য-মাসায়েল-৩



ঈদে যা বর্জন করা উচিত :
ঈদ হল মুসলমানদের শান-শওকত প্রদর্শন, তাদের আত্মার পরিশুদ্ধতা, তাদের ঐক্য সংহতি ও আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রতি আনুগত্য ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উৎসব। কিন্তু দুঃখজনক হল বহু মুসলিম এ দিনটাকে যথার্থ মূল্যায়ন করতে জানে না। তারা এ দিনে বিভিন্ন অইৈসলামীক কাজ-কর্মে মশগুল হয়ে পড়ে। এ ধরনের কিছু কাজ-কর্মের আলোচনা করা হল :
(১) কাফেরদের সাথে সাদৃশ্য রাখে এমন ধরনের কাজ বা আচরণ করা
মুসলিম সমাজে এ ব্যাধি ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তারা পোশাক-পরিচ্ছদে, চাল-চলনে, শুভেচ্ছা বিনিময়ে অমুসলিমদের অন্ধ অনুকরণে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। এর মাধ্যমে তারা যেমন সাংস্কৃতিক দৈন্যতার পরিচয় দিচ্ছে অপর দিকে নিজেদের তাহজীব-তামাদ্দুনের প্রতি অনীহা দেখাচ্ছে। এ ধরনের আচরণ ইসলামে শরীয়তে নিষিদ্ধ। হাদীসে এসেছে—
عن عبد الله بن عمرو رضي الله عنهما أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : من تشبه بقوم فهو منهم رواه أبو داود:৩৫১২ وصححه الألباني
সাহাবী আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেছেন : ‘যে ব্যক্তি অন্য জাতির সাথে সা-দৃশ্যতা রাখবে সে তাদের দলভুক্ত বলে গণ্য হবে।’ 
এ হাদীসের ব্যাখ্যায় শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, ‘এ হাদীসের বাহ্যিক অর্থ হল, যে কাফেরদের সাথে সাদৃশ্য রাখবে সে কাফের হয়ে যাবে। যদি এ বাহ্যিক অর্থ (কুফরীর হুকুম) আমরা না-ও ধরি তবুও কমপক্ষে এ কাজটি যে হারাম তাতে সন্দেহ নেই।’
(২) পুরুষ কর্তৃক মহিলার বেশ ধারণ করা ও মহিলা কর্তৃক পুরুষের বেশ ধারণ: পোশাক-পরিচ্ছদ, চাল-চলন ও সাজ-সজ্জার ক্ষেত্রে পুরুষের মহিলার বেশ ধারণ ও মহিলার পুরুষের বেশ ধারণ করা হারাম। ঈদের দিনে এ কাজটি অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। হাদীসে এসেছে—
عن ابن عباس رضي الله عنهما عن النبي صلى الله عليه وسلم : أنه لعن المتشبهات من النساء بالرجال والمتشبهين من الرجال بالنساء. أبو داود:৩৫৭৪
ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  ঐ সকল মহিলাকে অভিসম্পাত করেছেন যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে এবং ঐ সকল পুরুষকে অভিসম্পাত করেছেন যারা মহিলার বেশ ধারণ করে। 
(৩) ঈদের দিনে কবর যিয়ারত
কবর যিয়ারত করা শরীয়ত সমর্থিত একটা নেক আমল। যেমন হাদীসে এসেছে—
عن أنس رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : كنت نهيتكم عن زيارة القبور، ألا فزورها فإنها ترق القلب وتدمع العين وتذكر الآخرة، ولا تقولوا هجراً. صحيح الجامع: ৪৫৮৪
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেছেন : ‘আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, হ্যাঁ এখন তোমরা কবর যিয়ারত করবে। কারণ কবর যিয়ারত হৃদয়কে কোমল করে, নয়নকে অশ্র“সিক্ত করে ও পরকালকে স্মরণ করিয়ে দেয়। তবে তোমরা শোক ও বেদনা প্রকাশ করতে যেয়ে সেখানে কিছু বলবে না।’ 
কিন্তু ঈদের দিনে কবর যিয়ারতকে অভ্যাসে পরিণত করা বা একটা প্রথা বানিয়ে নেয়া শরীয়ত সম্মত নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেছেন :—
لا تجعلوا قبري عيداً . . . أبو داود:১৭৪৬
‘তোমরা আমার কবরে ঈদ উদযাপন করবে না বা ঈদের স্থান বানাবে না...।’ 

সিয়াম ও রমজান : শিক্ষা-তাৎপর্য-মাসায়েল-৩



ঈদে যা বর্জন করা উচিত :
ঈদ হল মুসলমানদের শান-শওকত প্রদর্শন, তাদের আত্মার পরিশুদ্ধতা, তাদের ঐক্য সংহতি ও আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রতি আনুগত্য ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উৎসব। কিন্তু দুঃখজনক হল বহু মুসলিম এ দিনটাকে যথার্থ মূল্যায়ন করতে জানে না। তারা এ দিনে বিভিন্ন অইৈসলামীক কাজ-কর্মে মশগুল হয়ে পড়ে। এ ধরনের কিছু কাজ-কর্মের আলোচনা করা হল :
(১) কাফেরদের সাথে সাদৃশ্য রাখে এমন ধরনের কাজ বা আচরণ করা
মুসলিম সমাজে এ ব্যাধি ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তারা পোশাক-পরিচ্ছদে, চাল-চলনে, শুভেচ্ছা বিনিময়ে অমুসলিমদের অন্ধ অনুকরণে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। এর মাধ্যমে তারা যেমন সাংস্কৃতিক দৈন্যতার পরিচয় দিচ্ছে অপর দিকে নিজেদের তাহজীব-তামাদ্দুনের প্রতি অনীহা দেখাচ্ছে। এ ধরনের আচরণ ইসলামে শরীয়তে নিষিদ্ধ। হাদীসে এসেছে—
عن عبد الله بن عمرو رضي الله عنهما أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : من تشبه بقوم فهو منهم رواه أبو داود:৩৫১২ وصححه الألباني
সাহাবী আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেছেন : ‘যে ব্যক্তি অন্য জাতির সাথে সা-দৃশ্যতা রাখবে সে তাদের দলভুক্ত বলে গণ্য হবে।’ 
এ হাদীসের ব্যাখ্যায় শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, ‘এ হাদীসের বাহ্যিক অর্থ হল, যে কাফেরদের সাথে সাদৃশ্য রাখবে সে কাফের হয়ে যাবে। যদি এ বাহ্যিক অর্থ (কুফরীর হুকুম) আমরা না-ও ধরি তবুও কমপক্ষে এ কাজটি যে হারাম তাতে সন্দেহ নেই।’
(২) পুরুষ কর্তৃক মহিলার বেশ ধারণ করা ও মহিলা কর্তৃক পুরুষের বেশ ধারণ: পোশাক-পরিচ্ছদ, চাল-চলন ও সাজ-সজ্জার ক্ষেত্রে পুরুষের মহিলার বেশ ধারণ ও মহিলার পুরুষের বেশ ধারণ করা হারাম। ঈদের দিনে এ কাজটি অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। হাদীসে এসেছে—
عن ابن عباس رضي الله عنهما عن النبي صلى الله عليه وسلم : أنه لعن المتشبهات من النساء بالرجال والمتشبهين من الرجال بالنساء. أبو داود:৩৫৭৪
ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  ঐ সকল মহিলাকে অভিসম্পাত করেছেন যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে এবং ঐ সকল পুরুষকে অভিসম্পাত করেছেন যারা মহিলার বেশ ধারণ করে। 
(৩) ঈদের দিনে কবর যিয়ারত
কবর যিয়ারত করা শরীয়ত সমর্থিত একটা নেক আমল। যেমন হাদীসে এসেছে—
عن أنس رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : كنت نهيتكم عن زيارة القبور، ألا فزورها فإنها ترق القلب وتدمع العين وتذكر الآخرة، ولا تقولوا هجراً. صحيح الجامع: ৪৫৮৪
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেছেন : ‘আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, হ্যাঁ এখন তোমরা কবর যিয়ারত করবে। কারণ কবর যিয়ারত হৃদয়কে কোমল করে, নয়নকে অশ্র“সিক্ত করে ও পরকালকে স্মরণ করিয়ে দেয়। তবে তোমরা শোক ও বেদনা প্রকাশ করতে যেয়ে সেখানে কিছু বলবে না।’ 
কিন্তু ঈদের দিনে কবর যিয়ারতকে অভ্যাসে পরিণত করা বা একটা প্রথা বানিয়ে নেয়া শরীয়ত সম্মত নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেছেন :—
لا تجعلوا قبري عيداً . . . أبو داود:১৭৪৬
‘তোমরা আমার কবরে ঈদ উদযাপন করবে না বা ঈদের স্থান বানাবে না...।’ 

সিয়াম ও রমজান : শিক্ষা-তাৎপর্য-মাসায়েল-৩



ঈদে যা বর্জন করা উচিত :
ঈদ হল মুসলমানদের শান-শওকত প্রদর্শন, তাদের আত্মার পরিশুদ্ধতা, তাদের ঐক্য সংহতি ও আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রতি আনুগত্য ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উৎসব। কিন্তু দুঃখজনক হল বহু মুসলিম এ দিনটাকে যথার্থ মূল্যায়ন করতে জানে না। তারা এ দিনে বিভিন্ন অইৈসলামীক কাজ-কর্মে মশগুল হয়ে পড়ে। এ ধরনের কিছু কাজ-কর্মের আলোচনা করা হল :
(১) কাফেরদের সাথে সাদৃশ্য রাখে এমন ধরনের কাজ বা আচরণ করা
মুসলিম সমাজে এ ব্যাধি ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তারা পোশাক-পরিচ্ছদে, চাল-চলনে, শুভেচ্ছা বিনিময়ে অমুসলিমদের অন্ধ অনুকরণে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। এর মাধ্যমে তারা যেমন সাংস্কৃতিক দৈন্যতার পরিচয় দিচ্ছে অপর দিকে নিজেদের তাহজীব-তামাদ্দুনের প্রতি অনীহা দেখাচ্ছে। এ ধরনের আচরণ ইসলামে শরীয়তে নিষিদ্ধ। হাদীসে এসেছে—
عن عبد الله بن عمرو رضي الله عنهما أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : من تشبه بقوم فهو منهم رواه أبو داود:৩৫১২ وصححه الألباني
সাহাবী আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেছেন : ‘যে ব্যক্তি অন্য জাতির সাথে সা-দৃশ্যতা রাখবে সে তাদের দলভুক্ত বলে গণ্য হবে।’ 
এ হাদীসের ব্যাখ্যায় শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, ‘এ হাদীসের বাহ্যিক অর্থ হল, যে কাফেরদের সাথে সাদৃশ্য রাখবে সে কাফের হয়ে যাবে। যদি এ বাহ্যিক অর্থ (কুফরীর হুকুম) আমরা না-ও ধরি তবুও কমপক্ষে এ কাজটি যে হারাম তাতে সন্দেহ নেই।’
(২) পুরুষ কর্তৃক মহিলার বেশ ধারণ করা ও মহিলা কর্তৃক পুরুষের বেশ ধারণ: পোশাক-পরিচ্ছদ, চাল-চলন ও সাজ-সজ্জার ক্ষেত্রে পুরুষের মহিলার বেশ ধারণ ও মহিলার পুরুষের বেশ ধারণ করা হারাম। ঈদের দিনে এ কাজটি অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। হাদীসে এসেছে—
عن ابن عباس رضي الله عنهما عن النبي صلى الله عليه وسلم : أنه لعن المتشبهات من النساء بالرجال والمتشبهين من الرجال بالنساء. أبو داود:৩৫৭৪
ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  ঐ সকল মহিলাকে অভিসম্পাত করেছেন যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে এবং ঐ সকল পুরুষকে অভিসম্পাত করেছেন যারা মহিলার বেশ ধারণ করে। 
(৩) ঈদের দিনে কবর যিয়ারত
কবর যিয়ারত করা শরীয়ত সমর্থিত একটা নেক আমল। যেমন হাদীসে এসেছে—
عن أنس رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : كنت نهيتكم عن زيارة القبور، ألا فزورها فإنها ترق القلب وتدمع العين وتذكر الآخرة، ولا تقولوا هجراً. صحيح الجامع: ৪৫৮৪
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেছেন : ‘আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, হ্যাঁ এখন তোমরা কবর যিয়ারত করবে। কারণ কবর যিয়ারত হৃদয়কে কোমল করে, নয়নকে অশ্র“সিক্ত করে ও পরকালকে স্মরণ করিয়ে দেয়। তবে তোমরা শোক ও বেদনা প্রকাশ করতে যেয়ে সেখানে কিছু বলবে না।’ 
কিন্তু ঈদের দিনে কবর যিয়ারতকে অভ্যাসে পরিণত করা বা একটা প্রথা বানিয়ে নেয়া শরীয়ত সম্মত নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেছেন :—
لا تجعلوا قبري عيداً . . . أبو داود:১৭৪৬
‘তোমরা আমার কবরে ঈদ উদযাপন করবে না বা ঈদের স্থান বানাবে না...।’ 

সিয়াম ও রমজান : শিক্ষা-তাৎপর্য-মাসায়েল-৩



ঈদে যা বর্জন করা উচিত :
ঈদ হল মুসলমানদের শান-শওকত প্রদর্শন, তাদের আত্মার পরিশুদ্ধতা, তাদের ঐক্য সংহতি ও আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রতি আনুগত্য ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উৎসব। কিন্তু দুঃখজনক হল বহু মুসলিম এ দিনটাকে যথার্থ মূল্যায়ন করতে জানে না। তারা এ দিনে বিভিন্ন অইৈসলামীক কাজ-কর্মে মশগুল হয়ে পড়ে। এ ধরনের কিছু কাজ-কর্মের আলোচনা করা হল :
(১) কাফেরদের সাথে সাদৃশ্য রাখে এমন ধরনের কাজ বা আচরণ করা
মুসলিম সমাজে এ ব্যাধি ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তারা পোশাক-পরিচ্ছদে, চাল-চলনে, শুভেচ্ছা বিনিময়ে অমুসলিমদের অন্ধ অনুকরণে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। এর মাধ্যমে তারা যেমন সাংস্কৃতিক দৈন্যতার পরিচয় দিচ্ছে অপর দিকে নিজেদের তাহজীব-তামাদ্দুনের প্রতি অনীহা দেখাচ্ছে। এ ধরনের আচরণ ইসলামে শরীয়তে নিষিদ্ধ। হাদীসে এসেছে—
عن عبد الله بن عمرو رضي الله عنهما أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : من تشبه بقوم فهو منهم رواه أبو داود:৩৫১২ وصححه الألباني
সাহাবী আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেছেন : ‘যে ব্যক্তি অন্য জাতির সাথে সা-দৃশ্যতা রাখবে সে তাদের দলভুক্ত বলে গণ্য হবে।’ 
এ হাদীসের ব্যাখ্যায় শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, ‘এ হাদীসের বাহ্যিক অর্থ হল, যে কাফেরদের সাথে সাদৃশ্য রাখবে সে কাফের হয়ে যাবে। যদি এ বাহ্যিক অর্থ (কুফরীর হুকুম) আমরা না-ও ধরি তবুও কমপক্ষে এ কাজটি যে হারাম তাতে সন্দেহ নেই।’
(২) পুরুষ কর্তৃক মহিলার বেশ ধারণ করা ও মহিলা কর্তৃক পুরুষের বেশ ধারণ: পোশাক-পরিচ্ছদ, চাল-চলন ও সাজ-সজ্জার ক্ষেত্রে পুরুষের মহিলার বেশ ধারণ ও মহিলার পুরুষের বেশ ধারণ করা হারাম। ঈদের দিনে এ কাজটি অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। হাদীসে এসেছে—
عن ابن عباس رضي الله عنهما عن النبي صلى الله عليه وسلم : أنه لعن المتشبهات من النساء بالرجال والمتشبهين من الرجال بالنساء. أبو داود:৩৫৭৪
ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  ঐ সকল মহিলাকে অভিসম্পাত করেছেন যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে এবং ঐ সকল পুরুষকে অভিসম্পাত করেছেন যারা মহিলার বেশ ধারণ করে। 
(৩) ঈদের দিনে কবর যিয়ারত
কবর যিয়ারত করা শরীয়ত সমর্থিত একটা নেক আমল। যেমন হাদীসে এসেছে—
عن أنس رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : كنت نهيتكم عن زيارة القبور، ألا فزورها فإنها ترق القلب وتدمع العين وتذكر الآخرة، ولا تقولوا هجراً. صحيح الجامع: ৪৫৮৪
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেছেন : ‘আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, হ্যাঁ এখন তোমরা কবর যিয়ারত করবে। কারণ কবর যিয়ারত হৃদয়কে কোমল করে, নয়নকে অশ্র“সিক্ত করে ও পরকালকে স্মরণ করিয়ে দেয়। তবে তোমরা শোক ও বেদনা প্রকাশ করতে যেয়ে সেখানে কিছু বলবে না।’ 
কিন্তু ঈদের দিনে কবর যিয়ারতকে অভ্যাসে পরিণত করা বা একটা প্রথা বানিয়ে নেয়া শরীয়ত সম্মত নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেছেন :—
لا تجعلوا قبري عيداً . . . أبو داود:১৭৪৬
‘তোমরা আমার কবরে ঈদ উদযাপন করবে না বা ঈদের স্থান বানাবে না...।’ 

সিয়াম ও রমজান : শিক্ষা-তাৎপর্য-মাসায়েল-২



সিয়াম ও রমজান : শিক্ষা-তাৎপর্য-মাসায়েল-২
সিয়াম পালন যাদের উপর ফরজ
কার জন্য সিয়াম পালন ফরজ ?
প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন, মুকীম, সামর্থ্যবান মুসলিমের জন্য সিয়াম পালন ফরজ।
যে ব্যক্তি এ সকল শর্তাবলির অধিকারী তাকে অবশ্যই রমজান মাসে সিয়াম পালন করতে হবে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন :—
‘সুতরাং তোমাদের মাঝে যারা এ মাস পাবে তারা যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে।’ 
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেছেন :—
إذا رأيتم الهلال فصوموا. مسلم:১০৮১
‘যখন তোমরা রমজানের চাঁদ দেখবে তখন সিয়াম পালন করবে।’ 
দশ প্রকার মানুষের মাঝে সিয়াম পালনের এ সকল শর্তাবলি অনুপস্থিত। তারা হল :
প্রথম : কাফের বা অমুসলিম
কারণ তারা ইবাদত করার যোগ্যতা রাখে না। ইবাদত করলেও তাদের মধ্যে ইসলাম অনুপস্থিত থাকার কারণে তা সহীহ হবে না, কবুলও হবে না। যদি কোন কাফের রমজানে ইসলাম গ্রহণ করে, তবে পিছনের সিয়ামের কাজা আদায় করতে হবে না। কারণ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন :—
‘যারা কুফরী করে তাদেরকে বল, ‘যদি তারা বিরত হয় তবে যা অতীতে হয়েছে আল্লাহতা ক্ষমা করবেন।’ 
তবে রমজানের দিনে ইসলাম গ্রহণ করলে ঐ দিনের বাকি অংশটা পানাহার থেকে বিরত থাকবে।
দ্বিতীয় : অপ্রাপ্ত বয়স্ক
অপ্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তার জন্য সিয়াম পালন ফরজ নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেছেন :—
رفع القلم عن ثلاثة : عن النائم حتى يستيقظ، وعن الصغير حتى يكبر، وعن المجنون حتى يفيق. السنن الكبرى للنسائي:৫৬২৬
‘তিন ব্যক্তি থেকে কলমকে উঠিয়ে রাখা হয়েছে। নিদ্রা মগ্ন ব্যক্তি যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়। কম বয়সী ব্যক্তি যতক্ষণ না সে প্রাপ্ত বয়স্ক হয়। পাগল ব্যক্তি যতক্ষণ না সে সুস্থ হয়।’ 
যদিও অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক-বালিকাদের উপর সিয়াম পালন ফরজ নয় তবে অভিভাবকরা অভ্যস্ত করার জন্য তাদের সিয়াম পালন করতে বলবেন। সাহাবায়ে কেরাম তাদের বাচ্চাদের সিয়াম পালনে অভ্যস্ত করেছেন। তাই আমাদের জন্য মুস্তাহাব হল আমরাও আমাদের অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানদের সিয়াম পালনে উদ্বুদ্ধ করব, যদি সিয়াম পালন তাদের কোন ক্ষতি না করে।
অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়ে কখন বালেগ বা প্রাপ্তবয়স্ক হয় ?
যদি কোন অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক বা বালিকাদের মাঝে তিনটি আলামতের কোন একটি পরিলক্ষিত হয় তখন তাদের প্রাপ্তবয়স্ক বলে ধরা হবে। আলামত তিনটি হল:
(১) স্বপ্নদোষ অথবা অন্য কোন কারণে বীর্যপাত হলে।
(২) যৌনাঙ্গে কেশ দেখা দিতে শুরু করলে।
(৩) বয়স পনেরো বছর পূর্ণ হলে।
ছেলেদের মাঝে যখন এ তিনটি আলামতের কোন একটি পরিলক্ষিত হবে তখন তাদের পূর্ণবয়স্ক বলে ধরা হবে। অবশ্য মেয়েদের জন্য চতুর্থ একটি আলামত রয়েছে, তা হল মাসিক দেখা দেয়া। যদি দশ বছর বয়সী কিশোরীদেরও মাসিক দেখা দেয় তাহলে তাদের পূর্ণবয়স্ক বলে ধরতে হবে। এবং শরীয়তের সকল আদেশ-নিষেধ তার জন্য অবশ্য পালনীয় বলে গণ্য হবে। কোন কিশোর বা কিশোরী রমজান মাসের দিনের বেলা যদি বয়স প্রাপ্ত হয়, তাহলে তাকে দিনের অবশিষ্ট অংশ পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে। এ দিনের সওম তার কাজা করতে হবে না। পিতা-মাতার কর্তব্য হল, এ বিষয়ে সতর্ক থাকা ও সন্তানকে সচেতন করা। সাথে সাথে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তার উপর যে সকল ধর্মীয় দায়িত্ব-কর্তব্য আছে তা পালনে দিক-নির্দেশনা দেয়া। পাক-পবিত্রতা অর্জনের নিয়ম-নীতিগুলো সে জানে কি না বা মনে রাখতে পেরেছে কিনা তার প্রতি খেয়াল রাখা।
তৃতীয় : পাগল
পাগল বলতে বুঝায় যার জ্ঞান-বুদ্ধি লোপ পেয়েছে। যার কারণে ভাল-মন্দের মাঝে পার্থক্য করতে পারে না। এর জন্য সিয়াম পালন ফরজ নয়। যেমন পূর্বের হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে। পাগল যখনই সুস্থ হয়ে যাবে তখনই সে সিয়াম পালন শুরু করে দেবে। যদি এমন হয় যে দিনের কিছু অংশ সে সুস্থ থাকে কিছু অংশ অসুস্থ তাহলে সুস্থ হওয়া মাত্রই সে পানাহার থেকে বিরত থাকবে। সিয়াম পূর্ণ করবে। পাগলামি শুরু হলেই তার সিয়াম ভঙ্গ হবে না, যদি না সে সিয়াম ভঙ্গের কোন কাজ করে।
চতুর্থ : অশীতিপর বৃদ্ধ যে ভাল-মন্দের পার্থক্য করতে পারে না : এমন ব্যক্তি, যার বয়সের কারণে ভাল-মন্দ পার্থক্য করার অনুভূতি চলে গেছে সে শিশুর মতই। শিশু যেমন শরীয়তের নির্দেশমুক্ত তেমনি সেও। তবে অনুভূতি ফিরে আসলে সে পানাহার থেকে বিরত থাকবে। যদি তার অবস্থা এমন হয় যে কখনো অনুভূতি আসে আবার কখনো চলে যায়, তাহলে অনুভূতি থাকাকালীন সময়ে তার উপর সালাত, সিয়াম ফরজ হবে।
ঞ্চম : যে ব্যক্তি সিয়াম পালনের সামর্থ্য রাখে না : এমন সামর্থ্যহীন অক্ষম ব্যক্তি যার সিয়াম পালনের সামর্থ্য ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই। যেমন অত্যধিক বৃদ্ধ অথবা এমন রোগী যার রোগ মুক্তির সম্ভাবনা নেই—আল্লাহর কাছে আমরা এ ধরনের রোগ-ব্যাধি থেকে আশ্রয় চাই- এ ধরনের লোকদের সিয়াম পালন জরুরি নয়। কারণ সে এ কাজের সামর্থ্য রাখে না।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন :—
لاَ يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا . (البقرة : ২৮৬)
‘আল্লাহ কারো উপর এমন কোন কষ্টদায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না যা তার সাধ্যাতীত।’ 
কিন্তু এমন ব্যক্তির উপর সিয়ামের ফিদিয়া প্রদান করা ওয়াজিব। সিয়ামের ফিদিয়া হল, প্রতিটি দিনের পরিবর্তে একজন মিসকিন (অভাবী) লোককে খাদ্য প্রদান করবে।

সিয়াম ও রমজান : শিক্ষা-তাৎপর্য-মাসায়েল-১


 সিয়াম ও রমজান : শিক্ষা-তাৎপর্য-মাসায়েল-১
 আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
 بسم الله الرحمن الرحيم

 রমজান মাসের ফযীলত

রমজান মাসের আগমনে মুসলিমগণ আনন্দ প্রকাশ করে থাকেন। আনন্দ প্রকাশ করাই স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ততা। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন :—
বল, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়ায়। সুতরাং এতে তারা আনন্দিত হোক। তারা যা সঞ্চয় করে এটা তার চেয়ে উত্তম।

পার্থিব কোন সম্পদের সাথে আল্লাহর এ অনুগ্রহের তুলনা চলে না, তা হবে এক ধরনের অবাস্তব কল্পনা। যখন রমজানের আগমন হত তখন রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অতিশয় আনন্দিত হতেন, তার সাহাবাদের বলতেন:—

أتاكم رمضان شهر مبارك .سنن النسائي : ২১০৫

তোমাদের দ্বারে বরকতময় মাস রমজান এসেছে। এরপর তিনি এ মাসের কিছু ফযীলত বর্ণনা করে বলতেন :—

فرض الله عز وجل عليكم صيامه، تفتح فيه أبواب السماء، وتغلق فيه أبواب الجحيم، وتغل فيه مردة الشياطين، فيه ليلة خير من ألف شهر، من حرم خيرها فقد حرم. رواه النسائي: ২১১৮

আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য সিয়াম পালন ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দ্বারসমূহ খুলে দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। অভিশপ্ত শয়তানকে বন্দি করা হয়। এ মাসে রয়েছে একটি রাত যা হাজার রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যে ব্যক্তি এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো সে মূলত সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হল।

আমাদের কর্তব্য: আল্লাহর এ অনুগ্রহের মূল্যায়ন করতে চেষ্টা করা, এ মাসের ফযীলত ও তাৎপর্য অনুধাবনে সচেষ্ট হওয়া ও ইবাদত-বন্দেগীসহ সকল কল্যাণকর কাজে নিয়োজিত থাকা।

এ মাসের যে সকল ফযীলত রয়েছে তা হল:—

এক. এ মাসের সাথে ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রুকনের সম্পর্ক রয়েছে; আর তা হলো সিয়াম পালন।

হজ যেমন জিলহজ মাসের সাথে সম্পর্কিত হওয়ার কারণে সে মাসের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে এমনি সিয়াম রমজান মাসে হওয়ার কারণে এ মাসের মর্যাদা বেড়ে গেছে।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন :—

 ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমনি ফরজ করা হয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর—যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার।”

রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ইসলাম যে পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত তার একটি হল সিয়াম পালন। এ সিয়াম জান্নাত লাভের একটি মাধ্যম ; যেমন হাদীসে এসেছে :—

من آمن بالله ورسولـه، وأقام الصلاة، وآتى الزكاة، وصام رمضان، كان حقاً على الله أن يدخله الجنة ... رواه البخاري: ৭৪২৩

যে আল্লাহর তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনল, সালাত কায়েম করল, যাকাত আদায় করল, সিয়াম পালন করল রমজান মাসে, আল্লাহ তাআলার কর্তব্য হয়ে যায় তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো...।

 দুই. রমজান হল কুরআন নাযিলের মাস :

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন :—
 রমজান মাস, এতে নাযিল করা হয়েছে আল-কুরআন, যা মানুষের দিশারী এবং স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী।

রোজার আদব (২)



রোজার আদব (২)
(১০) ইফতারি করতে বিলম্ব না করা :
সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে রাতের আগমন ঘটে ও ইফতার করার সময় হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা বলেছেন:—
ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ (البقرة : ১৮৭)
‘অতঃপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পালন করবে।’ সূরা বাকারা : ১৮৭
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
إذا أقبل الليل هاهنا وأدبر النهار هاهنا وغربت الشمس فقد أفطر الصائم. رواه البخاري ومسلم
‘যখন এখান থেকে রাত্রির আগমন ঘটে ও ওখান থেকে দিন চলে যায় এবং সূর্য অস্ত যায় তখন সিয়াম পালনকারী ইফতার করবে।’ বর্ণনায় : বোখারি ও মুসলিম
তাই ইফতারের আদব হল সূর্যাস্ত মাত্রই তাড়াতাড়ি ইফতার করা। তাড়াতাড়ি ইফতার করার ব্যাপারে অনেক হাদিসে উৎসাহ দেয়া হয়েছে। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:—
لا يزال الناس بخير ما عجلوا الفطر .رواه البخاري ومسلم
‘মানুষ যতদিন পর্যন্ত তাড়াতাড়ি ইফতার করবে ততদিন কল্যাণের সাথে থাকবে।’ বর্ণনায় : বোখারি ও মুসলিম
তিনি আরো বলেছেন :—
لا يزال الدين ظاهرا ما عجل الناس الفطر، لأن اليهود والنصارى يؤخرونه. رواه أبو داود
‘যতদিন মানুষ তাড়াতাড়ি ইফতার করবে ততদিন দ্বীন বিজয়ী থাকবে। কেননা ইহুদি ও খ্রিস্টানরা ইফতারিতে দেরি করে।’ বর্ণনায় : আবু দাউদ
হাদিসে আরো এসেছে—
قال أبو الدرداء رضى الله عنه : ثلاث من أخلاق النبوة : تعجيل الإفطار، وتأخير السحور، ووضع اليمين على الشمال في الصلاة. رواه الطبراني
আবু দারদা রা. বলেন : ‘তিনটি বিষয় নবী চরিত্রের অংশ : তাড়াতাড়ি ইফতার করে ফেলা, দেরি করে সেহরি খাওয়া ও সালাতে দাঁড়িয়ে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা।’ বর্ণনায় : তাবরানী
আমর ইবনে মায়মুন আওদী বলেন :—
كان أصحاب محمد صلى الله عليه وسلم أسرع الناس إفطارا وأبطأهم سحورا. رواه عبد الرزاق
‘রাসূলুল্লাহ স.-এর সাহাবিরা সকলের চেয়ে তাড়াতাড়ি ইফতার করতেন ও সকলের চেয়ে দেরিতে সেহরি খেতেন।’ বর্ণনায় : মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক
কোন ব্যক্তি দেখে-শুনে ধারণা করে নিল যে, সূর্য ডুবে গেছে ও সে ইফতার করে নিল অথচ সূর্য তখনও অস্ত যায়নি এমতাবস্থায় তার সওমের কোন ক্ষতি হবে না। তবে ইফতার শুরু করার পর সে যদি বুঝতে পারে সূর্য এখনও অস্ত যায়নি তা হলে সাথে সাথে সে পানাহার থেকে বিরত হবে। তার বিষয়টা যে ভুলে পানাহার করেছে তার মতই।
  কেন তাড়াতাড়ি ইফতার ও দেরিতে সেহরি খাবেন ?
 প্রথমত: ইসলামি জীবনাদর্শের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ধর্মীয়, সংস্কৃতি, আচার-আচরণ ও লেবাস-পোশাকে ইহুদি ও খ্রিস্টানদের অনুকরণ প্রত্যাখ্যান করা। যেমন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন :
وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَ الَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ. الجاثية :১৮
‘যাদের জ্ঞান নেই তুমি তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করবে না।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
من تشبه بقوم فهو منهم
‘যে কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করবে সে তাদের দলভুক্ত বলে গণ্য হবে।’ এ হাদিস দ্বারা বুঝে আসে যে কাফেরদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করবে সে কাফের হয়ে যাবে। যদি সে কাফের না ও হয় তবে কাজটি যে হারাম বা নিষিদ্ধ এতে কোন সন্দেহ নেই।
দ্বিতীয়ত: আল্লাহর রাব্বুল আলামিন তার বান্দাদের প্রতি পরম দয়ালু। তিনি মানুষদের কষ্ট দিতে চান না কখনো। মানুষের জন্য সব কিছু তিনি সহজ করতে চান। তাই সিয়াম পালনকারীর যাতে অযথা কষ্ট না হয় সে দিকে লক্ষ্য রেখে দেরি করে সেহরি ও তাড়াতাড়ি ইফতারের নির্দেশ এসেছে। সিয়াম পালন করা যেমন ইসলামের নির্দেশ তেমনি সিয়ামের সময় শেষে পানাহার করাও ইসলামের নির্দেশ। এ নির্দেশ পালনে দেরি করা বা গড়িমসি করা কখনো ঠিক নয়।