দর্শক সংখ্যা

Showing posts with label দাওয়া. Show all posts
Showing posts with label দাওয়া. Show all posts

Sunday, March 24, 2013

আল্লাহর দিকে রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দাওয়াতের বাস্তব কিছু নমুনা-২


দ্বিতীয় অধ্যায়
হিজরতের পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম এর কার্যক্রমের বিবরণ
প্রথম পরিচ্ছেদ

উম্মতের সংশোধন করা ও তাদের মানুষরুপে গড়ে তোলার বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম হিকমত ও বুদ্ধি ভিত্তিক অবস্থান:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম মদিনায় পৌঁছে দেখেন যে, মদিনার অধিবাসীরা বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত এবং তারা নানাবিধ বিপরীতমুখী বিশ্বাসে জরজরিত। তারা তাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্যে সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী, তাদের চিন্তা চেতনায় একে অপরের সাথে কোন প্রকার মিল নেই। তাদের মধ্যে নতুন ও পুরাতন বিভিন্ন ধরনের মতানৈক্য ও মতপার্থক্যের কোন অভাব ছিল না। কিছু পার্থক্য ছিল এমন যেগুলো তারা নিজেরা আবিষ্কার করে, আর কিছু ছিল যে গুলো তারা তাদের পূর্বসূরিদের থেকে মিরাসি সূত্রে পায়মদিনার এ দ্বিধা বিভক্ত লোকগুলোকে ইতিহাসের আলোকে তিন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়।
এক. আওস, খাযরাজ ও মুহাজির মুসলিম।
দুই. আওস ও খাযরাজের মুশরিকরা; যারা ইসলামে প্রবেশ করেনি।
তিন. ইয়াহুদি সম্প্রদায়। তারাও আবার একাধিক গোত্রে বিভক্ত ছিল। যেমন, বনী কাইনুকা; যারা ছিল খাজরায গোত্রের সহযোগী। বনী নাজির ও বনী ক্বুরাইজা; এ দুটি গোত্র আওস গোত্রের লোকদের সহযোগী ছিল
এখানে একটি কথা মনে রাখতে হবে, আওস ও খাযরাজ গোত্রের মধ্যে দ্বন্ধ ছিল প্রাচীন ও ঐতিহাসিক। জাহিলিয়্যাতের যুগে তারা উভয় গোত্র সব সময় যুদ্ধ বিদ্রোহে লিপ্ত থাকত। যুগ যুগ ধরে তারা সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে যুদ্ধ চালাতো। তারা এতই খারাপ ছিল, তাদের অন্তরে সব সময় যুদ্ধের দাবানল জ্বলতে থাকত এবং যুদ্ধ করা ছিল তাদের নেশা[1]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম মদিনায় পৌঁছে প্রথমেই তিনি তার স্বীয় বুদ্ধিমত্তা, জ্ঞান ও কৌশল দিয়ে এ সব সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সে গুলোকে সমাধানের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এসব সমস্যা সমাধান, বাস্তব প্রেক্ষাপটকে নিয়ন্ত্রণ করা ও তাদের সবাইকে একটি ফ্লাট ফর্মে দাড় করানোর জন্য তিনি নিম্ন বর্ণিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করেন।
এক. মসজিদ নির্মাণ করার কাজে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
প্রথমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম যে কাজটি আরম্ভ করেন, তা হল, মসজিদে নববীর নির্মাণ কাজ। তিনি সবাইকে এ কাজে অংশ গ্রহণ করার সুযোগ দেন, যার ফলে সমস্ত মুসলিমরা এ কাজে অংশ গ্রহণ করেন। তাদের নেতৃত্বে থাকেন তাদের ইমাম মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ। এটি ছিল পরস্পর সহযোগিতামূলক ও সম্মিলিতভাবে সম্পাদিত ইসলামের সর্ব প্রথম কাজ। এ কাজের মাধ্যমে সবার মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব তৈরি হয় এবং মুসলিমদের কাজের জন্য সাধারণ লক্ষ্য নির্ধারণ হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম মদিনায় আগমনের পূর্বে মদিনার প্রতিটি গোত্রের জন্য একটি নির্ধারিত স্থান ছিল, তাতে তারা একত্র হয়ে গান, বাজনা, কিচ্ছা, কাহিনী, কবিতা পাঠ ইত্যাদির অনুষ্ঠান করত।

Friday, March 22, 2013

আল্লাহর দিকে রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দাওয়াতের বাস্তব কিছু নমুনা-১



সাঈদ বিন আলী বিন ওহাফ আল-কাহতানী
প্রথম অধ্যায়:
হিজরতের পূর্বে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাওয়াতি কার্যক্রম
প্রথম অধ্যায়কে কয়েকটি পরিচ্ছেদে ভাগ করা হয়েছে
প্রথম পরিচ্ছেদ:
গোপনে দাওয়াত দেওয়ার সময়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দাওয়াতি কার্যক্রম:
 এ কথা অজানা নয় যে, মক্কা ছিল, আরবদের ধর্ম পালনের প্রাণ কেন্দ্র ও উপযোগী ভূমি। এখানে ছিল আল্লাহর পবিত্র ঘর কাবার অবস্থান। আরবের সমগ্র মূর্তিপূজক ও পৌত্তলিকদের আবাসভূমি ও যাবতীয় কর্মের ঘাটিও ছিল, এ মক্কা নগরী। এ কথা আমাদের সবারই মনে রাখতে হবে, পাহাড় আর মরুভূমিতে ঘেরা পবিত্র এ মক্কা নগরীতে আল্লাহর দিকে মানুষকে দাওয়াত দেয়ার মিশনটিকে তার মনজিলে মকসুদে পৌঁছানো, ততটা সহজ ছিল না। বরং বলতে গেলে এটা ছিল অনেকটাই দুর্বোধ্য ও দু:সাধ্য। একজন সাধারণ মানবের দ্বারা এ অসাধ্য কাজকে সাধ্য করা এবং সফলতায় পৌঁছানো কোন ক্রমেই সম্ভব ছিল না। যদি দাওয়াতের জন্য নির্বাচিত ভূমি মক্কা না হয়ে অন্য কোন ভূমি হত, বা তা মক্কা থেকে অনেক দূরে হত, তাহলে এতটা কষ্টকর হয়তো হত না। এ কারণেই বলা বাহুল্য, এ অনুপযোগী ও অনুর্বর ভূমিতে দাওয়াতি কাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজন ছিল, এমন একজন মহা মানবের, যার দৃঢ়ত, আত্মপ্রত্যয় ও অবিচলতা হবে বিশ্বসেরা; যাতে কোন ধরনের বিপদ-আপদ ও মুসিবত তাকে ও তার দাওয়াতের মিশনটিকে কোন-রকম দুর্বল করতে না পারে। আরও প্রয়োজন ছিল, এমন সব হিকমত ও কৌশল অবলম্বন করা, যেসব বুদ্ধিমত্তা, হিকমত ও কৌশল দিয়ে, সে তার বিরুদ্ধে গৃহীত যাবতীয় ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে পারে এবং সব ধরনের বাধা বিঘ্ন দূর করে দাওয়াতের মিশনটিকে সফলতার ধার প্রান্তে পৌছাতে পারে। নি:সন্দেহে বলা যায়, অনুগ্রহ ও দয়া মহান আল্লাহরই যিনি হলেন, আহাকামুল হাকেমীন; তিনি যাকে চান হিকমত দান করেন, যাকে চান না তাকে হিকমত দান করেন না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يُؤۡتِي ٱلۡحِكۡمَةَ مَن يَشَآءُۚ وَمَن يُؤۡتَ ٱلۡحِكۡمَةَ فَقَدۡ أُوتِيَ خَيۡرٗا كَثِيرٗاۗ وَمَا يَذَّكَّرُ إِلَّآ أُوْلُواْ ٱلۡأَلۡبَٰبِ [البقرة: 269]
অর্থ, তিনি যাকে চান প্রজ্ঞা দান করেন। আর যাকে প্রজ্ঞা দেয়া হয়, তাকে অনেক কল্যাণ দেয়া হয়। আর বিবেক সম্পন্নগণই উপদেশ গ্রহণ করে[1]
আল্লাহ তাআলা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রিসালাতের দায়িত্ব দেয়ার মাধ্যমে হিকমত ও জ্ঞান দান করেছেন, ভালো কাজের তাওফিক দিয়েছেন এবং আল্লাহ তাকে তার যাবতীয় কর্মে সাহায্য করেছেন।
এ কারণে, আল্লাহর পক্ষ হতে যখন তার স্বজাতিদের ইসলামের দাওয়াত দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়, তখন তিনি তাদের দাওয়াত দেয়ার জন্য বিভিন্ন কৌশল ও হিকমত অবলম্বন করেন। তিন প্রথমেই সবাইকে ডেকে একত্র করে ইসলামের দাওয়াত দেয়া শুরু করেননি। প্রথমে দু একজনকে গোপনে গোপনে ইসলামের দাওয়াত দিতে আরম্ভ করেন; তারা যে সব শিরক, কুফর ও ফিতনা-ফ্যাসাদে নিমগ্ন, তার পরিণতি সম্পর্কে তাদের সতর্ক ও ভয় পদর্শন করেন। শুরুতেই তাদের যাবতীয় অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা আরম্ভ করেননি বরং প্রথমে তিনি তাদের তাওহীদের দাওয়াত দেয়া আরম্ভ করেন। তাওহীদের দিকে দাওয়াত দেয়ার মাধ্যমেই তিনি তার মিশনটি আরম্ভ করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلۡمُدَّثِّرُ ١ قُمۡ فَأَنذِرۡ ٢ وَرَبَّكَ فَكَبِّرۡ ٣ وَثِيَابَكَ فَطَهِّرۡ ٤ وَٱلرُّجۡزَ فَٱهۡجُرۡ ٥ وَلَا تَمۡنُن تَسۡتَكۡثِرُ ٦ وَلِرَبِّكَ فَٱصۡبِرۡ ٧ [المدثر: 1-7]
হে বস্ত্রাবৃত! উঠ অত:পর সতর্ক কর। আর তোমার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর। আর তোমার পোশাক-পরিচ্ছদ পবিত্র কর। আর অপবিত্রতা বর্জন কর। আর অধিক পাওয়ার আশায় দান করো না। আর তোমার রবের জন্যই ধৈর্যধারণ কর[2]

Friday, February 1, 2013

ইন্টারনেট ব্যবহার ও একজন প্রকৃত মুসলিমের কর্তব্য

আসসালামুআলাইকুম
ইন্টারনেট ব্যবহার ও একজন প্রকৃত মুসলিমের কর্তব্য 

আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন।এটা আমার দ্বিতীয় পোষ্ট। ২০১০ সালের ফেব্রয়ারির ১০ তারিখে দৈনিক প্রথম আলো’য় একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। সেটি এখানে হুবহু তুলে ধরছি। ‘ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের ধর্মগুরু পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট যেসব ধর্মযাজক তাঁদের বাণী বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের 1474w8x62808 (FILEminimizer)জন্য নতুন নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি ধর্মযাজকদের ওয়েবসাইটে নিজস্ব ব্লগ খোলার নির্দেশ দিয়েছেন। পোপ গত শনিবার ধর্মীয় বাণী প্রচারের জন্য এবং অন্য ধর্ম ও সংস্কৃতির লোকজনের সঙ্গে কথা বলার জন্য সম্ভব হলে সব মাল্টিমিডিয়া টুল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। পোপ বেনেডিক্ট এক বার্তায় বলেন, শুধু ই-মেইল ব্যবহার বা ওয়েব সার্ফ করাই যথেষ্ট নয়, নিজেদের প্রকাশ করা এবং নিজ নিজ সম্প্রদায়কে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ধর্মযাজকদের সব ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা উচিত। ভ্যাটিকান থেকে প্রকাশিত বার্তায় ৮২ বছর বয়সী পোপ আরও বলেন, তরুণ ধর্মযাজকদের নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে বেশি করে পরিচিত হওয়া উচিত। তিনি বিনোদন গণমাধ্যমগুলোর যৌনতা ও সহিংসতাকে উসকে দেওয়ার প্রবণতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তবে যোগাযোগের ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির ভূয়সী প্রশংসা করেন পোপ। তিনি বলেন, প্রযুক্তি মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় উপহার। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওয়েবে পোপের উপস্থিতি ব্যাপকভাবে লক্ষ করা গেছে। ভিডিও ও ছবি আদান-প্রদান করার ওয়েবসাইট ইউটিউবে পোপের একটি নিজস্ব চ্যানেল রয়েছে। এই চ্যানেলের মাধ্যমে পোপ তাঁর ধর্মীয় বাণী প্রচার করেন।’ ইন্টারনেট কীভাবে ইসলাম প্রচারে ভূমিকা রাখছে তার ধারণা দিতে ‘আল-সুন্নাহ’ নামক একটি ইসলামি সাইটের একজন দায়ীর বক্তব্য তুলে ধরছি। সাইটে প্রকাশিত এক নিবন্ধে তিনি বলেন, ‘ইন্টারনেট চ্যাটে আমাকে নিউজিল্যান্ডের এক বন্ধু জানিয়েছেন, তিনি বছর তিনেক আগে ইসলাম গ্রহণ করেছেন, তার বাবা-মা এখনো এ সম্পর্কে কিছুই জানেন না। আমেরিকান বোন তরুণী জামিলা জানিয়েছেন, তিনিও ইসলাম গ্রহণ করেছেন ইন্টারনেটের মাধ্যমে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে তিনি ইন্টারনেট থেকে ইসলামি বই-পুস্তক প্রিন্ট করে রাখেন। তারপর সাপ্তাহিক ছুটির দিন সেগুলো মনযোগ দিয়ে পড়েন। তিনি আমার কাছে অনেক ছাত্র ও গবেষকের পক্ষে মেইল করেন। আমি ইসলাম সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞাসার জবাব দেই। আমি সর্বশেষ যে মেইলের জবাব দিয়েছি সেটি পাঠিয়েছেন ১৫ বছর বয়সী এক বৃটিশ তরুণ। তিনি আমার কাছে 1471w8x62808 (FILEminimizer)জানতে চেয়েছেন মৃত্যুদণ্ডকে ইসলাম কোন দৃষ্টিতে দেখে? আমি আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের মেইলও পেয়েছি। তিনি আমার কাছে ইসলাম বিষয়ে অনেক কিছু জানতে চেয়েছেন।’ বাংলাদেশের আলেম-উলামার ইন্টারনেটে অনুপস্থিতির করুণ বাস্তবতা সম্পর্কে ধারণা পাই। বর্তমান বিশ্বে এমন সাইদ হাজার হাজার নয়, লাখ লাখ নয়; কোটি কোটি। একটু চিন্তা করে দেখুন, শুধু ইন্টারনেটে আলেম-উলামার আনাগোনা না থাকায় একজন প্রকৌশলী বাংলাদেশকে মসজিদ-মাদরাসা আর আলেম-উলামার দিক থেকে কত না কাঙাল ভেবেছিলেন! পক্ষান্তরে ইসলামপন্থীরা যখন ইন্টারনেট থেকে দূরে তখন তাদের বিপক্ষ শক্তিগুলো একে কতটা কাজে লাগাচ্ছেন তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে ধরিয়ে দিচ্ছে প্রথম আলোয় প্রকাশিত দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের এই প্রতিবেদনটি। অনেকে মনে করেন ইন্টারনেটে শুধু খারাপ ছবি আর সিনেমা দেখার কাজ হয়, তাদের ভুল ভেঙ্গে দিতে ভূমিকা রাখতে পারে তৃতীয় অনুচ্ছেদে তুলে ধরা আরবি একটি প্রবন্ধের এই কিয়দাংশ। আমরা যারা ইন্টারনেট থেকে দূরে, তারা মনে করি, বাংলাদেশের কয়জনই বা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। আমাদের এ অমূলক ধারণা ভেঙ্গে দিতে একটি তথ্যই যথেষ্ট যে এ দেশের জাতীয় দৈনিকগুলোর প্রিন্ট ভার্সন যতজন পড়েন, তারচেয়েও অনেক অনেক বেশিজন পড়েন ইন্টারনেট ভার্সন। যে পত্রিকার প্রিন্ট ভার্সনের পাঠক দুই লাখ তার নেট ভার্সনের পাঠক অন্তত তিন লাখ। শীর্ষ দৈনিক প্রথম আলো থেকে নিয়ে পিচ্চি দৈনিক আমাদের সময় পর্যন্ত সবগুলোর নেট ভার্সনের পাঠক প্রিন্ট ভার্সনের দ্বিগুণ বা তারচেয়েও বেশি। তাছাড়া আমরা জানি, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে। অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে দেশে এখন ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে। প্রত্যেক সাংসদকে নেট সংযোগ বিশিষ্ট ল্যাপটপ সরবরাহ করা হয়েছে। দেশের প্রতিটি কলেজ এমনকি স্কুলে পর্যন্ত নেট সংযোগ বিশিষ্ট কম্পিউটার সরবরাহের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামী এক দেড় বছরের মধ্যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেয়ারও সক্রিয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শুধু উন্নত বা উন্নয়নশীল বিশ্বেই নয়; অনুন্নত বিশ্বেও আজ ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়ছে খুব দ্রুত গতিতে। উন্নত বিশ্বে এখন লেখাপড়া থেকে নিয়ে কেনাকাটা পর্যন্ত সবকিছুই হচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। সেদিন বেশি দূরে নয় যেদিন বাংলাদেশের, অন্তত শহরের কোটি কোটি মানুষও তাদের সব প্রয়োজন মেটাবার জন্য প্রথমে ধর্ণা দেবে ইন্টারনেটের কাছে। ইন্টারনেটে ইংরেজি ও আরবি ভাষায় একজন সাধারণ মানুষ থেকে নিয়ে বিদগ্ধ গবেষক পর্যন্ত এমন কোনো শ্রেণী নেই যাদের জ্ঞানের পর্যাপ্ত খোরাক নেই। দুনিয়া বা আখিরাতের প্রতুল তথ্য নেই। এর জন্য কোনো নির্দিষ্ট ওয়েব সাইটের এড্রেস জানারও দরকার হয় না। প্রয়োজনীয় তথ্যের একটি সম্ভাব্য শব্দ দিয়ে গুগলে সার্চ দিলেই উপস্থিত হয় শত শত প্রবন্ধ বা বইয়ের (লিংক) এড্রেস। তারপর সেই এড্রেসে একটি মাত্র ক্লিকেই পেতে পাওয়া যায় কাক্ষিত তথ্য। উদাহরণ স্বরূপ আমার নিজের অভিজ্ঞতাটাই শেয়ার করি। আমি এই প্রবন্ধটি লেখার আগে ইন্টারনেটে আরবি ভাষায় ‘আদ-দাওয়াতু ইলাল্লাহ আবরাল ইন্টারনেট’ (অর্থাৎ, ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইসলাম প্রচার) লিখে সার্চ দিলাম। বেশ এ সম্পর্কে দশ বারোটি প্রবন্ধ পেয়ে গেলাম। বক্ষমাণ নিবন্ধের তৃতীয় অনুচ্ছেদে উদ্ধৃত ‘আল-সুন্নাহ’ সাইটের সন্ধান আমি এভাবেই পেয়েছি। কিন্তু বাংলায় এভাবে কোনো শব্দ দিয়ে ইসলামি কোনো প্রবন্ধ বা বই পাওয়া সহজ নয়। আরবি এবং ইংরেজি ভাষাভাষীরা তাদের হক যথাযথভাবে আদায় করছেন বললে অত্যুক্তি হবে না। অথচ এই দুই ভাষার পরই পৃথিবীর অন্যতম বহুল ব্যবহৃত ভাষা বাংলায় এর হক প্রায় পুরোটাই অনাদায় রয়ে গেছে। বাংলায় ইসলামের বাইরের বিষয় ইন্টারনেটে অভাব নেই। কিন্তু ইসলামি বিষয় নেই বললেই চলে। যা-ও আছে তার অধিকাংশই বিভিন্ন বিভ্রান্ত মতাদর্শীদের সরবরাহকৃত। তাই শ্রদ্ধেয় উলামায়ে কেরামের কাছে অনুরোধ, এই অপ্রতিরোধ্য ইন্টারনেট আগ্রাসনের যুগে আপনারা একে আর এড়িয়ে চলবেন না। মন্দের সর্বপ্লাবী বিস্তারের আগেই আপনারাও এগিয়ে আসুন সুন্দরের বিস্তারে। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমীন। আমাদের দেশের বেশ কিছু মেধাবী বাংলায় আল-কুরআনের সফটওয়্যার তৈরি করেছে। আমাদের প্রত্যেকেরই এই সফটওয়্যার পিসিতে ইনষ্টল রাখা প্রয়োজন। অনেক সময় দেখা যায় আমরা Facebook or other social network-এ অপ্রয়োজনীয় সময় ব্যয় করি। আমাদের ষ্টাটাসে যদি কুরআন Untitled-11বা হাদীসের আপডেট থাকে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুরাও উপকৃত হন, তাছাড়া প্রত্যেক মুসলিমের দাওয়াত দেয়া অপরিহারয কর্ত্যব বিভিন্ন জনের কুরআনের বাংলা অনুবাদের লিংক দিলাম। দোআ করবেন। http://muslim.zohosites.com www.facebook.com/pages/Al-Quran-Modern-Science/140069416050931 
শাহরিয়ার আজম সাভার