অতিউৎসাহী পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে : ভেঙে পড়ছে চেইন অব কমান্ড
দৈনিক আমার দেশ : ০৮/০৩/২০১৩
অতিউৎসাহী পুলিশ সদস্যরা বিরোধী জোটের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি ও বিক্ষোভ-মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। কখনও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে এবং কখনও নির্দেশ ছাড়াই বিশেষ অঞ্চলের বাসিন্দা (গোপালগঞ্জ-কিশোরগঞ্জ) পুলিশ সদস্যরা বিরোধী দলের বিক্ষোভ মিছিলে মুহুর্মুহু গুলি চালাচ্ছে। অতিউৎসাহীদের তালিকায় রয়েছে উপজাতি বা বিশেষ কোটায় নিয়োগ পাওয়া পুলিশ সদস্যরাও। শুধু তাই নয়, আটক করে নিয়ে হাত-পা বেঁধে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি চালিয়ে হত্যা ও পঙ্গু করার মতো লোমহর্ষক ঘটনাও ঘটাচ্ছে পুলিশ বাহিনীর এই বিতর্কিত সদস্যরা। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখন এ ধরনের ভয়াবহ পুলিশি তাণ্ডব ছড়িয়ে পড়ছে। বলা যায়, পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে দেশ। সূত্র জানায়, বর্তমানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের সাবেক দুর্র্ধষ ক্যাডারদের সমাবেশ ঘটেছে পুলিশ বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে। তারা আইন-কানুন, মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার, সভ্যতা-ভব্যতা সবকিছু প“লিত করে চলেছেন বেপরোয়াভাবে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিষ্ঠুর কায়দায় দমনের পাশাপাশি চাঁদাবাজি, ডাকাতি, নির্যাতন, ঘুষ, ছিনতাইয়ের মতো গুরুতর অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে এসব বাহিনীর কোনো কোনো সদস্য। সাধারণ রাজনীতিচর্চার অপরাধে প্রকাশ্যে বুকের ওপর বুট
দিয়ে দলিত করা ও বিনা উস্কানিতে নির্মমভাবে প্রহার করেই এখন আর ক্ষান্ত হচ্ছে না। বিরোধী জোটের আন্দোলন দমাতে নিষ্ঠুরভাবে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ঢাকার পুলিশ প্রশাসনে নীরব অস্থিরতা বিরাজ করছে। একই সঙ্গে এর চেইন অব কমান্ড অনেকাংশেই ভেঙে পড়েছে। পেশাদার কর্মকর্তাদের মধ্যে কাজ করছে চরম হতাশা। আর সিনিয়র কর্মকর্তাদের মধ্যে একদিকে যেমন বদলি এবং ওএসডি আতঙ্ক বিরাজ করছে, অন্যদিকে বিরাজ করছে ক্ষোভ। পুলিশের দলাদলি ও রেষারেষির কারণে রাজধানীর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বেহাল চিত্র ফুটে উঠেছে। অপরাধীদের ধরতে নানা নামে অভিযানেও মিলছে না সফলতা। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটলেও সেদিকে দৃষ্টি নেই পুলিশের। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার হচ্ছে পুলিশ। মাঠে কর্মরত ত্যাগী ও নীতিবান পুলিশের মতে, তাদের যেটুকু তৎপরতা রয়েছে তার সবই চাকরি টিকিয়ে রাখার জন্য মাত্র। অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ৫০ থানার ওসি, ইন্সপেক্টর এবং গুরুত্বপূর্ণ পদ ছাড়াও মাঠ পর্যায়ে অধিকাংশ পুলিশ সদস্য দুটি বিশেষ এলাকার বাসিন্দা। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর এলাকার বাছাইকৃত ও বিশেষ কোটায় চাকমা-উপজাতীয় পুলিশ সদস্যদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বদলি ও পদোন্নতি দিয়ে ঢাকায় আনা হয়েছে। অধিকাংশ থানার ওসি, ইন্সপেক্টর ও সাব-ইন্সপেক্টর এবং কনস্টেবলের বাড়ি বৃহত্তর ফরিদপুর ও কিশোরগঞ্জ এলাকায়। এছাড়াও ৮টি ক্রাইম জোনের পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যেও অঞ্চলভিত্তিক ব্যক্তির সংখ্যাই বেশি। একইভাবে পুলিশ সদর দফতর, ডিএমপি হেড কোয়ার্টার্স, গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি), সিআইডি ও এসবিতে বিশেষ এলাকার বাসিন্দা পুলিশ সদস্যরাই প্রথম সারিতে মাঠ পর্যায়ের দায়িত্বে রয়েছেন। বিশেষ অঞ্চল ও উপজাতি এসব পুলিশ সদস্য এখন মাঠে বেপরোয়া আচরণ করছে। তারা সিনিয়রদের তোয়াক্কা করছে না। অতিউৎসাহী এই পুলিশ সদস্যরা বিরোধী নেতাকর্মীদের নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা করছে। ধরে নিয়ে আটক করার পর অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে মানুষ হত্যা করছে। মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় দেয়ার পর সারা দেশে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে। আল্লামা সাঈদীর মুক্তির দাবিতে গত ১৫ দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষ, গ্রামবাসী ও বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর পুলিশি অ্যাকশনে দেশের ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বিবৃতি দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এরপরও থেমে নেই পুলিশের গুলি চালানো। অতিউৎসাহী পুলিশ সদস্যরা অস্ত্র উঁচিয়ে নির্বিচারে মুহুর্মুহু গুলি চালিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালানো অব্যাহত রাখছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১২৪ শিশু, নারী, গৃহবধূ ও সাধারণ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। গণতান্ত্রিক কর্মসূচি সভা-সমাবেশ ও মিছিলে গুলি চালানোর ক্ষেত্রে সিনিয়রদের নির্দেশেরও তোয়াক্কা করছে না বিশেষ অঞ্চলের পুলিশ সদস্যরা। ছোটখাটো ঘটনায়ও তারা ব্যবহার করছে আগ্নেয়াস্ত্র। যেসব ঘটনায় টিয়ার গ্যাস, পানি কামান ব্যবহার বা প্রাথমিক কৌশল অবলম্বন করে পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব, সেসব ক্ষেত্রে পুলিশ এখন নির্বিচারে গুলি ও হ্যান্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে যুদ্ধংদেহী অবস্থায় অবতীর্ণ হয়েছে। বিএনপির মিছিলে গুলি না করায় ২ পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার : ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে বিএনপির মিছিলে গুলি না করায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গতকাল দুপুরে এমন ঘটনা ঘটে। প্রত্যাহার করা পুলিশ কর্মকর্তাদের নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে তাদের একজন মতিঝিল জোনের এসি বলে জানা গেছে। দুপুর দেড়টার দিকে হঠাৎ করে হরতালের সমর্থনে নয়াপল্টনে বিএনপির পল্টন থানা শাখার ব্যানারে ৮-১০ জনের একটি মিছিল বের হয়। এসময় উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের ‘গুলি গুলি’ বলে সামনে এগোনোর নির্দেশ দেন পুলিশের মতিঝিল জোনের এডিসি মেহেদী হাসান। পুলিশ সদস্যরা অ্যাকশনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আগেই মিছিলকারীরা আশপাশের অলিগলি দিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। গুলি না করা এবং সেখান থেকে কাউকে আটক করতে না পারায় নিম্নপদস্থ দুই পুলিশ কর্মকর্তার ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন মেহেদী হাসান। জিজ্ঞেস করেন-তারা কে কোন ব্যাচ থেকে এসেছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তাকে ফোনে বিষয়টি জানান। এসময় তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে থাকতে হলে আমার মতো করে কাজ করতে হবে। তার কিছুক্ষণ পর দুই পুলিশ কর্মকর্তা একটি মাইক্রো করে নয়াপল্টনে দায়িত্ব পালন থেকে চলে যান। দুই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে মেহেদী হাসান এক সিনিয়র সাংবাদিককে বলেন, ‘ভাই, প্লিজ আপনারা এমন সাংবাদিকতা করবেন না। এসব আমাদের ইন্টারনাল ব্যাপার। এগুলো আপনারা দেখলেও না দেখার মতো করে অন্যদিকে চলে যাবেন।’ জবাবে ওই সাংবাদিক রাগান্বিত হয়ে বলেন, ‘আপনারা প্রকাশ্যে আপনাদের কর্মকর্তাদের গালাগাল করতে পারবেন, আর আমরা দেখার পর সেসব জিজ্ঞেসও করতে পারব না’ পরে ওই সাংবাদিককে শান্ত হওয়ার এবং ওই বিষয়টি না লেখার অনুরোধ জানান এডিসি মেহেদী হাসান।
দৈনিক আমার দেশ : ০৮/০৩/২০১৩
অতিউৎসাহী পুলিশ সদস্যরা বিরোধী জোটের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি ও বিক্ষোভ-মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। কখনও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে এবং কখনও নির্দেশ ছাড়াই বিশেষ অঞ্চলের বাসিন্দা (গোপালগঞ্জ-কিশোরগঞ্জ) পুলিশ সদস্যরা বিরোধী দলের বিক্ষোভ মিছিলে মুহুর্মুহু গুলি চালাচ্ছে। অতিউৎসাহীদের তালিকায় রয়েছে উপজাতি বা বিশেষ কোটায় নিয়োগ পাওয়া পুলিশ সদস্যরাও। শুধু তাই নয়, আটক করে নিয়ে হাত-পা বেঁধে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি চালিয়ে হত্যা ও পঙ্গু করার মতো লোমহর্ষক ঘটনাও ঘটাচ্ছে পুলিশ বাহিনীর এই বিতর্কিত সদস্যরা। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখন এ ধরনের ভয়াবহ পুলিশি তাণ্ডব ছড়িয়ে পড়ছে। বলা যায়, পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে দেশ। সূত্র জানায়, বর্তমানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের সাবেক দুর্র্ধষ ক্যাডারদের সমাবেশ ঘটেছে পুলিশ বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে। তারা আইন-কানুন, মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার, সভ্যতা-ভব্যতা সবকিছু প“লিত করে চলেছেন বেপরোয়াভাবে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিষ্ঠুর কায়দায় দমনের পাশাপাশি চাঁদাবাজি, ডাকাতি, নির্যাতন, ঘুষ, ছিনতাইয়ের মতো গুরুতর অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে এসব বাহিনীর কোনো কোনো সদস্য। সাধারণ রাজনীতিচর্চার অপরাধে প্রকাশ্যে বুকের ওপর বুট
দিয়ে দলিত করা ও বিনা উস্কানিতে নির্মমভাবে প্রহার করেই এখন আর ক্ষান্ত হচ্ছে না। বিরোধী জোটের আন্দোলন দমাতে নিষ্ঠুরভাবে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ঢাকার পুলিশ প্রশাসনে নীরব অস্থিরতা বিরাজ করছে। একই সঙ্গে এর চেইন অব কমান্ড অনেকাংশেই ভেঙে পড়েছে। পেশাদার কর্মকর্তাদের মধ্যে কাজ করছে চরম হতাশা। আর সিনিয়র কর্মকর্তাদের মধ্যে একদিকে যেমন বদলি এবং ওএসডি আতঙ্ক বিরাজ করছে, অন্যদিকে বিরাজ করছে ক্ষোভ। পুলিশের দলাদলি ও রেষারেষির কারণে রাজধানীর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বেহাল চিত্র ফুটে উঠেছে। অপরাধীদের ধরতে নানা নামে অভিযানেও মিলছে না সফলতা। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটলেও সেদিকে দৃষ্টি নেই পুলিশের। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার হচ্ছে পুলিশ। মাঠে কর্মরত ত্যাগী ও নীতিবান পুলিশের মতে, তাদের যেটুকু তৎপরতা রয়েছে তার সবই চাকরি টিকিয়ে রাখার জন্য মাত্র। অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ৫০ থানার ওসি, ইন্সপেক্টর এবং গুরুত্বপূর্ণ পদ ছাড়াও মাঠ পর্যায়ে অধিকাংশ পুলিশ সদস্য দুটি বিশেষ এলাকার বাসিন্দা। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর এলাকার বাছাইকৃত ও বিশেষ কোটায় চাকমা-উপজাতীয় পুলিশ সদস্যদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বদলি ও পদোন্নতি দিয়ে ঢাকায় আনা হয়েছে। অধিকাংশ থানার ওসি, ইন্সপেক্টর ও সাব-ইন্সপেক্টর এবং কনস্টেবলের বাড়ি বৃহত্তর ফরিদপুর ও কিশোরগঞ্জ এলাকায়। এছাড়াও ৮টি ক্রাইম জোনের পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যেও অঞ্চলভিত্তিক ব্যক্তির সংখ্যাই বেশি। একইভাবে পুলিশ সদর দফতর, ডিএমপি হেড কোয়ার্টার্স, গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি), সিআইডি ও এসবিতে বিশেষ এলাকার বাসিন্দা পুলিশ সদস্যরাই প্রথম সারিতে মাঠ পর্যায়ের দায়িত্বে রয়েছেন। বিশেষ অঞ্চল ও উপজাতি এসব পুলিশ সদস্য এখন মাঠে বেপরোয়া আচরণ করছে। তারা সিনিয়রদের তোয়াক্কা করছে না। অতিউৎসাহী এই পুলিশ সদস্যরা বিরোধী নেতাকর্মীদের নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা করছে। ধরে নিয়ে আটক করার পর অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে মানুষ হত্যা করছে। মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় দেয়ার পর সারা দেশে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে। আল্লামা সাঈদীর মুক্তির দাবিতে গত ১৫ দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষ, গ্রামবাসী ও বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর পুলিশি অ্যাকশনে দেশের ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বিবৃতি দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এরপরও থেমে নেই পুলিশের গুলি চালানো। অতিউৎসাহী পুলিশ সদস্যরা অস্ত্র উঁচিয়ে নির্বিচারে মুহুর্মুহু গুলি চালিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালানো অব্যাহত রাখছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১২৪ শিশু, নারী, গৃহবধূ ও সাধারণ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। গণতান্ত্রিক কর্মসূচি সভা-সমাবেশ ও মিছিলে গুলি চালানোর ক্ষেত্রে সিনিয়রদের নির্দেশেরও তোয়াক্কা করছে না বিশেষ অঞ্চলের পুলিশ সদস্যরা। ছোটখাটো ঘটনায়ও তারা ব্যবহার করছে আগ্নেয়াস্ত্র। যেসব ঘটনায় টিয়ার গ্যাস, পানি কামান ব্যবহার বা প্রাথমিক কৌশল অবলম্বন করে পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব, সেসব ক্ষেত্রে পুলিশ এখন নির্বিচারে গুলি ও হ্যান্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে যুদ্ধংদেহী অবস্থায় অবতীর্ণ হয়েছে। বিএনপির মিছিলে গুলি না করায় ২ পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার : ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে বিএনপির মিছিলে গুলি না করায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গতকাল দুপুরে এমন ঘটনা ঘটে। প্রত্যাহার করা পুলিশ কর্মকর্তাদের নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে তাদের একজন মতিঝিল জোনের এসি বলে জানা গেছে। দুপুর দেড়টার দিকে হঠাৎ করে হরতালের সমর্থনে নয়াপল্টনে বিএনপির পল্টন থানা শাখার ব্যানারে ৮-১০ জনের একটি মিছিল বের হয়। এসময় উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের ‘গুলি গুলি’ বলে সামনে এগোনোর নির্দেশ দেন পুলিশের মতিঝিল জোনের এডিসি মেহেদী হাসান। পুলিশ সদস্যরা অ্যাকশনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আগেই মিছিলকারীরা আশপাশের অলিগলি দিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। গুলি না করা এবং সেখান থেকে কাউকে আটক করতে না পারায় নিম্নপদস্থ দুই পুলিশ কর্মকর্তার ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন মেহেদী হাসান। জিজ্ঞেস করেন-তারা কে কোন ব্যাচ থেকে এসেছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তাকে ফোনে বিষয়টি জানান। এসময় তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে থাকতে হলে আমার মতো করে কাজ করতে হবে। তার কিছুক্ষণ পর দুই পুলিশ কর্মকর্তা একটি মাইক্রো করে নয়াপল্টনে দায়িত্ব পালন থেকে চলে যান। দুই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে মেহেদী হাসান এক সিনিয়র সাংবাদিককে বলেন, ‘ভাই, প্লিজ আপনারা এমন সাংবাদিকতা করবেন না। এসব আমাদের ইন্টারনাল ব্যাপার। এগুলো আপনারা দেখলেও না দেখার মতো করে অন্যদিকে চলে যাবেন।’ জবাবে ওই সাংবাদিক রাগান্বিত হয়ে বলেন, ‘আপনারা প্রকাশ্যে আপনাদের কর্মকর্তাদের গালাগাল করতে পারবেন, আর আমরা দেখার পর সেসব জিজ্ঞেসও করতে পারব না’ পরে ওই সাংবাদিককে শান্ত হওয়ার এবং ওই বিষয়টি না লেখার অনুরোধ জানান এডিসি মেহেদী হাসান।
No comments:
Post a Comment