ইসলাম,
বিজ্ঞান ও জেন্ডার সমতা প্রসঙ্গ
মহাবিশ্বের
প্রতিটি বিষয় জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্ট, কথাটা কোন মিথ বা কল্পকাহিনি নয়। তা বরং সদর্পে স্থান করে আছে বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের লিস্টে।
পৃথিবী বক্ষে সৃষ্ট প্রতিটি বিষিয়েরই রয়েছে একটি প্রতি-বিষয় ইংরেজিতে যাকে ঢ়ধরৎং এবং
সরল বাংলায় জোড়া বলা যায়। আর প্রতিটি বিষয় ও প্রতি-বিষয় তাদের সৃষ্টির উদ্দেশ্য সাধনে
প্রয়াসী একে অন্যের সাথে মিলিত হয়ে। প্রকৃতিতে বিরাজমান এই অমোঘ নীতির অভিব্যক্তি পবিত্র
কোরআনে এসেছে এভাবে: “ আমি প্রতিটি বিষয়কেই সৃষ্টি করেছি জোড়ায় জোড়ায় যাতে তোমরা অনুধাবন
করতে পার।” [ সূরা যারিয়াত:৪৫]
প্রকৃতির
প্রতিটি বিষয় সৃষ্টি করা হয়েছে জোড়ায় জোড়ায় — বস্তুতে পজিটিভ ও নেগেটিভ পরমাণু, উদ্ভিদ
জগতে স্ত্রী লিঙ্গের ও পুং লিঙ্গের উদ্ভিদ। প্রাণী জগতে স্ত্রী ও পুরুষ, মনুষ্য জগতে
নারী ও পুরুষ— এই জোড়ানির্ভর সৃষ্টি প্রকৌশলে নির্মিত হয়েছে এই মহাবিশ্বের প্রতিটি
বস্তু।
নারী ও পুরুষ একে অন্যের সঙ্গী হয়ে তাদের ওপর অর্পিত
দায়িত্ব পালনে প্রয়াসী, জোড়া সর্বস্বতার এই প্রাকৃতিক রীতির দুর্পার বন্ধনের কারণেই।
নারী ও পুরুষ একে অন্যের জন্য সম্পূরক সত্তা (পড়সঢ়ষবসবহঃ) মিলিত হয়ে পূর্ণাঙ্গ সত্তায় পরিণত হয় এদের উভয়েই। এদের একজনকে
বাদ দিলে অন্যজন থাকে অপূর্ণ।
নারী
ও পুরুষের জেন্ডারগত সাম্যের ( এবহফবৎ ঊয়ঁধষরঃু) ধারণা আধুনিক সভ্যতায় প্রচার পেয়েছে
বর্ণনাতীতভাবে। জেন্ডার ইকুয়ালিটির মানে নারী-পুরুষ
সকল দিক থেকে, অভিন্নভাবে একে অন্যের সমান,
ঊয়ঁধষ। যে নারী সেই পুরুষ, আর যে পুরুষ সেই নারী— এটাই হল জেন্ডার সাম্যতার মূল বক্তব্য। অর্থাৎ নারী ও পুরুষে ধরনগত, প্রকারগত, প্রকৃতিগত
অথবা অন্য কোন দিক থেকে কোন প্রকার কোন পার্থক্যের অস্তিত্ব নেই। খুবই চমৎকার ধারণা।
তবে প্রকৃতির অবকাঠামোয় এ ধারণা কেবল বে-সুরাই নয় দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রত্যাখ্যাত। আর
প্রকৃতির অবকাঠামো যে ধারণাকে ঠাঁই দিতে নারাজ তা আমলে আনা আদৌ সম্ভবপর নয়।
মহাবিশ্বের
স্রষ্টা সৃষ্টিকর্মে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টির প্রকৌশল অবলম্বন করেছেন। জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টিকর্ম-শৈলীর
এ ভাগ-বিভাজন উভয়ের মাঝে সাম্যতার বিভাজনকে নির্দেশ করে না। একে অন্যকে পূর্ণাঙ্গতা
দানের বিভাজনকে তা বরং নির্দেশ করে। অন্যভাবে বলতে গেলে বলা যায়, নারী ও পুরুষের ব্যাপারটি জেন্ডার ইকুয়ালিটির ব্যাপার নয়। শুদ্ধ অর্থে তা
হল মবহফবৎ পড়সঢ়ষবসবহঃধষরঃু জেন্ডারগত পূর্ণাঙ্গতা দানের ব্যাপার। অর্থাৎ নারী-পুরুষের
প্রত্যেকেই একটি পূর্ণাঙ্গ সত্তার অর্ধেক। দু’জনে মিলে একটি মানব সত্তা যার অর্ধেক
হল নর এবং অর্ধেক হল নারী।
বস্তুত
নারী ও পুরুষের জোড়ার বিষটি প্রকৃতিতে বিরাজিত
অন্যান্য বিষয়ের জোড়ার মতই। উদাহরণত যে কোন বস্তুর প্রাথমিক ইউনিটকে এটম বলা হয়। আর
প্রতিটি এটমেই একই মুহূর্তে ভিন্ন প্রকৃতির দুটি পার্টিক্যাল পাওয়া যায়। একটি নেতিবাচক
পার্টিক্যাল, অন্যটি ইতিবাচক পার্টিক্যাল । এ দুটি জোড়া আকারে প্রতিটি বস্তুরই অংশ।
তবে এর
অর্থ কখনোই এ রকম নয় যে এটমে বিরাজিত উভয় অংশের মাঝে উল্লিখিত ধরনের জেন্ডার সাম্যতা
রয়েছে— যা নেতিবাচক পার্টিক্যাল তাই ইতিবাচক পার্টিক্যাল, এবং যা ইতিবাচক পার্টিক্যাল
তাই নেতিবাচক পার্টিক্যাল, এ বক্তব্য কোন উন্মাদ বিজ্ঞানীর পক্ষে দেওয়া সম্ভব হলেও
কাণ্ডজ্ঞান রয়েছে এমন সাধারণ ব্যক্তির পক্ষেও তা বলা সম্ভব হবে না। এটমের ইতি-নেতি
পার্টিক্যাল একে অন্যের অপূর্ণতায় পূর্ণতা দান করে মাত্র। অর্থাৎ যা ইতি-র মধ্যে রয়েছে
তা নেতি-র মধ্যে নেই। যা নেতি-র মধ্যে রয়েছে তা ইতি-র মধ্যে নেই। তাই উভয়ে মিলে একে
অন্যকে পূর্ণাঙ্গতা দান করে ও প্রকৃতির নিয়মবদ্ধ কর্ম সাধনে প্রয়াসী হয়।
নারী
ও পুরুষের বিষয়টি এর থেকে ভিন্ন নয়। নারী-পুরুষ সবদিক থেকে একে অন্যের সমান নয়, বরং
একে অন্যের পরিপূরক পার্টনার। উভয়কে মিলে সম্মিলিত সাধনায় আদায় করতে হবে অর্পিত জীবনের
দায় দায়িত্ব। নারী ব্যতীত পুরুষ অপূর্ণ, আধুরা। আর পুরুষ ব্যতীত নারী অপূর্ণ, আধুরা।
আধুনিক
সভ্যতার জেন্ডার সাম্যতার বলয়ে যে সমাজ গড়ে উঠবে তা হবে একটি কৃত্রিম সমাজ, এ কথা হলফ
করেই বলা যায়। প্রকৃতির অমোঘ নিয়মের সাথে অসংগতি, দ্রোহী অবস্থানের ভিত্তিতে কখনো কোন
সফল-সার্থক সমাজ বিনির্মিত হতে পারে না। প্রকৃতির অমোঘ বিধান যেহেতু দুর্লঙ্ঘ্য, অপরিবর্তনযোগ্য,
এ ক্ষেত্রে তাই অন্য কোনো তদবির-সমাধান প্রকৃতি থেকে বিচ্যুতির ভুল শোধরাতে অপারগ বলে
গণ্য হবে।
বস্তুজগতের
পুরোটাই, আমারা সবাই জানি, নেতি-ইতি পার্টিক্যালের পরস্পর মিলনে গড়ে উঠেছে। এই মিলন
সম্পূর্ণ বস্তুগতকে করেছে সংগতিপূর্ণ, সুষমা মণ্ডিত। এ উভয় পার্টিক্যাল, ধরে নিলাম,
বৈশিষ্ট্যে, ধরন-ধারনে, প্রকৃতিতে একই রকম হয়ে যায়, অর্থাৎ যে ধরনের গুণাগুণ-বৈশিষ্ট্য
নেতি পার্টিক্যালের আছে, সেই একই ধরনের গুণাগুণ-বৈশিষ্ট্য ইতি পার্টিক্যালের হয়ে গেল,
এবং যেসব গুণাগুণ-বৈশিষ্ট্য ইতি পার্টিক্যালের আছে সেসব গুণাগুণ অভিন্নভাবে নেতি পার্টিক্যাল ধারণ করে বসল তাহলে তাবৎ বস্তুজগৎ
অসংগত, বিক্ষিপ্ত হয়ে যাবে সন্দেহাততভাবে।
নারী-পুরুষের
ক্ষেত্রটি এর থেকে ভিন্ন নয়। নারী-পুরুষের একত্রিত হওয়া যদি একে অন্যকে পূর্ণাঙ্গতা
দানের তত্ত্বের আওতায় হয়, তাহলে মনুষ্য সমাজ একটি সংগত-সুসংহত সমাজের রূপ নেবে। পরস্পরিক দ্রোহী অবস্থা
থেকে মুক্ত একটি সুষম সমাজ প্রতিষ্ঠা পাবে। নারী-পুরুষের পারস্পরিক সম্পর্ক
যদি, এর বিপরীতে, আধুনিক সভ্যতার প্রচারিত তত্ত্বের আওতায় গড়ে ওঠে,
এবং নারী-পুরুষ উভয়কে আকারে-প্রকারে-ধরনে-ধারণে-বৈশিষ্ট্যে সমানে সমান থিওরির ভিত্তিতে
দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়, মনুষ্য সমাজ, তা হলে, বিক্ষিপ্ত-অসংগত, ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যেতে বাধ্য।
সমাজের যেদিকেই তাকানো যাবে সেদিকেই বিধ্বস্ত পরিবারের সকরুণ দৃশ্য দেখার দুর্ভাগ্য
হতে নিষ্কৃতি পাওয়ার কোন পথ খোঁজে পাওয়া যাবে না, যেরূপ দেখা যায় পাশ্চাত্য বিশ্বে।
পবিত্র
কুরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘ তাঁর নিদর্শনমালার মধ্যে একটি এই যে তিনি তোমাদের জাতের মধ্য
হতেই তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন জোড়া যাতে তোমরা তার সান্নিধ্যে তৃপ্তি অনুভব কর,
আর তিনি তোমাদের মধ্যে মুহব্বত ও রহমত সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীলদের জন্য
ন রয়েছে নিদর্শন। [ সূরা রূম: ২১]
কুরআনের
এ আয়াত থেকে স্পষ্টই বুঝা যাচ্ছে যে মানুষের প্রতি আল্লাহর বিশেষ রহমতের একটি এই যে
তিনি তার জন্য তারই মত একটি জোড়া সৃষ্টি করে দিয়েছেন। উপরন্তু তিনি এ জোড়া ‘এটমে’র
ইতি- নেতি পার্টিক্যালের ন্যায় হৃদয়হীন, ভাবলেশহীন করে সৃষ্টি করেন নি, তাতে বরং সন্নিবিষ্ট
করে দিয়েছেন অন্য জোড়ার প্রতি প্রেম-ভালোবাসা-রহমত
ও মমত্ববোধ। যাতে সে জোড়ার সংলগ্নতায়-স্পর্শে অনুভব করে তৃপ্তি-আনন্দ ।
নারী-পুরুষ
উভয়ের ক্ষেত্রেই এ কথাটি সত্য। নারী-পুরুষের প্রত্যেকেই একে অন্যের জোড়া— আরবীতে জাওয।
উভয়েই একে অন্যের জন্য øিগ্ধতা ও মায়া-মহব্বত লাভের মাধ্যম। ইহজগৎ, সন্দেহ নেই, ঝঞ্ঝাটপূর্ণ,
সমস্যাসংকুল। এখানে প্রতিনিয়ত মানুষকে মুখোমুখী হতে হয় নানা প্রতিকূলতার। নারী-পুরুষ
উভয়েরই, এ অবস্থায়, প্রয়োজন øিগ্ধতার পরশ পাওয়ার মত এক আশ্রয়ের। প্রজ্ঞাময় স্রষ্টা
তাঁর নিখুঁত ব্যবস্থাপনায় নারী-পুরুষ উভয়কে
করেছেন একে অন্যের জন্য প্রেমময় ঝরনাধারা। জীবন-যুদ্ধের ঝক্কিঝামেলার ইন্টার্ভালে ক্লান্তি
ঝেরে মায়াবী পরশের ছোঁয়া পেতে যাতে সমর্থ
হয় একে অন্যের সান্নিধ্যে এসে।
মানুষের
জীবন নিঃসন্দেহে একটি উত্তপ্ত যুদ্ধক্ষেত্র। জীবন-যুদ্ধের অমসৃণ ময়দানে নিরন্তর লড়াইয়ের
নানা পর্যায়ে মানুষ বারবার শিকার হয় মানসিক চাপের। এমতাবস্থায় প্রত্যেক নর-নারীর প্রয়োজন
চাপ উপশমকারী সহায়ক সঙ্গীর যে নাকি তার পাশে
দাঁড়াবে মমতাভরা হৃদয় নিয়ে। মানসিক চাপ থেকে নিষ্কৃতি দিয়ে যে না কি তাকে আবার ফিরিয়ে
নিয়ে যাবে মানসিক স্বাভাবিকতার অবস্থায়। নারী-পুরুষ উভয়ে একে অনন্যে জন্য ডিস্ট্রসিঙ্গ-
এর এক নিরাপদ-নির্ভরযোগ্য মাধ্যম। আর এভাবেই একজন অন্যজন থেকে সঞ্চয় করে যায় শক্তি।
নারী-পুরুষের সম্পর্ক যদি সঠিক ভিত্তি-ভূমে কায়েম হয়ে যায়, এবং একে অন্যের গুরুত্বকে
হৃদয় দিয়ে অনুধাবন করতে লাগে তাহলে বিবাহিত জীবন অবলম্বনের পর প্রতিটি ঘর একটি প্রতিষ্ঠানের
(রহংঃরঃঁঃব ) রূপ পরিগ্রহ করে। এই প্রতিষ্ঠান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য এমন জীবন-কেন্দ্রে
পরিণত হবে যা উভয় পক্ষের জন্যই সব থেকে বড় শক্তিতে পরিণত হবে। যা উভয় পক্ষকে এমন বানাবে
যে কখনো সে একাকিত্ব অনুভব করবে না। প্রতিকূল পরিবেশেও সে সফলভাবে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে
যেতে সক্ষম হবে। আর এভাবেই একসময় সে জীবন-যুদ্ধের সমাপ্তিতে এসে উল্লসিত হৃদয়ে বিজয়
কেতন উড়াতে সক্ষম হবে।
আল-কুরআন
সঞ্চারিত ভাব অনুযায়ী নারী ও পুরুষে কর্ম বিভাজনের নীতি রাখা হয়েছে। সে হিসেবে নারী
ও পুরুষ উভয়ের কর্মক্ষেত্র ( ড়িৎশ ঢ়ষধপব )
মৌলিকভাবেই ভিন্ন । এ ক্ষেত্রে উভয়েই যেন এক
গাড়ির দুই চাকার মত যার একটি অন্যটি থেকে ভিন্ন বটে তবে সম্মিলিত কর্ম সম্পাদনের ক্ষেত্রে
একটি অন্যটির সহায়ক শক্তি হিসেবে নিরন্তরভাবে সচল।
আধুনিক
সভ্যতাজাত ডিস্কোর্সে বিষয়টি সম্পূর্ণই পালটে যায়। আধুনিক সভ্যতা কাজ ভাগাভাগির ধারণার
পরিবর্তে অভিন্ন কাজ ও কর্মক্ষেত্রের ধারণা
হাজির করে। বাস্তব ক্ষেত্রে, পাশ্চাত্যে অবশ্য আজও কাজ ভাগাভাগির রেওয়াজ বলবৎ রয়েছে,
তবে তাত্ত্বিক দৃষ্টিতে যা অবলম্বিত তা হল অভিন্ন কর্মের ফরমুলা। যদিও অপ্রাকৃতিক হওয়ার
কারণে না এ ধরনের অভিন্ন কর্মপদ্ধতি কোথাও সম্ভব, না তা বাস্তবে রয়েছে কোথাও প্রতিষ্ঠিত।
ইসলামে
নারী-পুরুষের মাঝে যে বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য স্বীকৃত তা কেবলই বাস্তব ও প্রায়োগিক প্রয়োজনের
দাবি পুরণের জন্যই। সম্মান, অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে অবশ্য নারী-পুরুষ উভয়ের মধ্যেই
রয়েছে পূর্ণ সমতা। সম্মান ও মর্যাদার ক্ষেত্রে নারী পুরুষে আদৌ কোন বৈষম্য নেই।
পৃথিবীর
প্রতিটি বিষয়ের জোড়ার নীতি রাখা হয়েছে। নারী ও পুরুষেও এ নীতি কার্যকর। তবে নারী-পুরুষের
এ জোড়া উভয়ের মাঝে কেবল পার্থক্যকে বুঝায়, বৈষম্যকে বুঝায় না। এ পার্থক্য এ জন্য যাতে উভয়েই একে অপরের
সম্পূরক হয়ে জীবন-যুদ্ধের নিরন্তর কর্মজজ্ঞ উত্তমরূপে পেরুতে পারে। তবে এটি একটি সর্বস্বীকৃত
ব্যাকরণ যে প্রতিটি নিয়মেরই ব্যতিক্রম রয়েছে।
এ ব্যতিক্রম
নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই পরিলক্ষিত। কিছু নারী বাহ্যদৃষ্টিতে নারী হলেও যোগ্যতায়
তারা পুরুষতুল্য। একই রূপে কিছু পুরুষ এমন রয়েছে যারা বাহ্যদৃশ্যে পুরুষ হলেও নারীসুলভ
বৈশিষ্ট্যের বাহক। এ প্রকৃতির ব্যতিক্রম নারীতে যেমন, পুরুষেও তেমনি। তবে এই ব্যতিক্রমের
উপর ভিত্তি করে কোন ব্যাপক পরিসরে বাস্তবায়নযোগ্য কোন নীতি দাঁড় করানো যাবে না। কেননা এ ধরনের নীতি সাধারণ অবস্থাকে বিবেচনায় রেখে
দাঁড় করানো হয়। ব্যতিক্রমী কোনো উদাহরণকে আশ্রয় করে ব্যাকরণের কোন নিয়ম রচনা করা যায়
না।
পৃথিবীতে
মানুষকে চিন্তা ও কর্মের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এ কারণেই এখানে মানুষের পক্ষে সম্ভব
যে সে যা ইচ্ছা তাই চিন্তা করবে, যা ইচ্ছা তা করবে। তবে এ স্বাধীনতা ব্যক্তির নিজস্ব সীমানাতেই কেবল বাস্তবায়নযোগ্য। কর্মের ফলাফল পর্যন্ত এ স্বাধীনতা
প্রলম্বিত হয় না। ফলাফলের ক্ষেত্রে মানুষ বিন্দুমাত্রও স্বাধীন নয়। ফলাফল, তাই, বের
হবে প্রকৃতির নিয়ম-মাফিক যেভাবে বের হতে হয়।
এর অর্থ নারী-পুরুষের প্রকৃতিগত রীতি ভেঙ্গে ফেলার স্বাধীনতা নারী-পুরুষের রয়েছে। তবে
ফলাফল যা বের হবার তাই বের হবে প্রকৃতির অমোঘ নিয়ম অনুসরণ করে। নিজের খেয়ালখুশি মতো
ফলাফল বের করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়।
সমাপ্ত
No comments:
Post a Comment