দর্শক সংখ্যা

Monday, January 28, 2013

ইসলাম পৃথিবীর সমধিক অগ্রসরমান ধর্ম, বিশেষ করে ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনার পর


ইসলাম পৃথিবীর সমধিক অগ্রসরমান ধর্ম, বিশেষ করে ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনার পর
ইউসুফ ইস্টস
অনুবাদক : আবু শুআইব মুহাম্মদ সিদ্দীক
           
ইসলাম পৃথিবীর সমধিক অগ্রসরমান ধর্ম
ইসলামের দিকে প্রতিটি মানুষের প্রত্যাবর্তন প্রসঙ্গে আপনার প্রশ্নটি ভাল। আপনি আমাকে এমন একটি বিষয়ে অনুপ্রবেশের সুযোগ কর দিলেন যা বহুদিন ধরে আমার আগ্রহকে লালন করে আসছে। বর্তমান বিশ্বে ইসলামের দিকে মানুষের ফিরে আসা এবং বিষয়টি আমাদের কাছে যে বার্তা পোঁছাচ্ছে তা নিয়ে লেখার ইচ্ছা বহুদিন ধরেই আমি লালন করে আসছিলাম হৃদয়ের মণিকোঠায়
 
ধর্মান্তরিত হওয়ার পরিবর্তে ইসলাম ধর্মে ফিরে আসার পরিভাষার ব্যবহার-
আমি Revert ( ফিরে-আসা) পরিভাষা ব্যবহার করতে চাই, Convert (ধর্মান্তরিত হওয়ার পরিবর্তে); কেননা পরিভাষাটিই মানুষের জন্মলগ্নের প্রাকৃতিক অবস্থায় পুনরায় ফিরে আসাকে বুঝায়। একটি বাচ্ছা তার সৃষ্টিকর্তার প্রতি পূর্ণ আত্মসমর্পণ, নতিস্বীকার, আনুগত্য শান্তির মানসিকতা নিয়ে জন্ম নেয়। আর এটাই হল একজন মুসলিমের যথার্থ পর্যায়। অর্থাৎ আল্লাহর ইচ্ছার সামনে নিজের ইচ্ছাকে বিলুপ্ত করে দেওয়া এবং এর মধ্যেই তৃপ্তি অনুভব করা।মানুষকে ধর্মান্তরিত করে মুসলমান বানানো,’ -ধরনের চিন্তার চেয়ে, ‘ মানুষ তার জন্মলগ্নের প্রাকৃতিক অবস্থানে প্রত্যাবর্তন করছে,’ বললে বিষয়টি সহজেই বোঝা সম্ভব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘প্রতিটি শিশুই (ইসলামের প্রতি সৃষ্টিগত ঝোঁক, যেমন- স্রষ্টার প্রতি সমর্পিত হৃদয়, তাঁর প্রতি পূর্ণাঙ্গ আনুগত্য ইত্যাদি) নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, অতঃপর তার মাতা-পিতা তাকে ইহুদি অথবা খৃস্টান অথবা অগ্নিপূজক রূপে গড়ে তোলে।
 
. টেড কাম্পবেল ( Dr. Ted Campbell)-
 যিনি মেরিল্যান্ডের একটি  ধর্মীয় স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি করেন, গত বছর মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত একটি আলোচনা সভায় একই মঞ্চে তার আমি সাথে আলোচনায় অংশ নিয়েছিলাম। খুবই চমৎকারভাবে চলমান আন্তধর্মীয় আলোচনার শেষ পর্যায়ে একটি অস্বাভাবিক ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হই আমরা দুজনেই নোয়াহ, যিনি উক্ত অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন, বললেন, প্রশ্নটার উত্তর আমাদের উভয়কেই  দিতে হবে। প্রশ্নটি হল: “Why are each of you in your religion?” (আপনাদের উভয়ে কেন নিজ নিজ ধর্মে আছেন?)
. কাম্পবেল উত্তর দেয়ার জন্য মাইক্রোফোনের কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন। তিনি সম্মেলন কক্ষের এদিক সেদিক তাকিয়ে নিলেন। এরপর তিনি যা বললেন তা কখনো ভুলে যাবার মতো নয়। তিনি বললেন: “I guess I would have to say that I am a Methodist because, well because, my parents raised me that way. As a Methodist.”
(আমার ধারণা মতে, আমার বলা উচিত যে আমি একজন মেথডিস্ট; কারণ, হ্যাঁ কারণ, আমার মাতা-পিতা আমাকে এভাবেই  বড় করেছেন, একজন মেথডিস্ট হিসেবে।)
আসলে তিনি ঠিকই বলেছেন।
আমরা যারা মুসলমান তারা বিষয়টি -ভাবেই জানি। তবে আমার ক্ষেত্রে প্রশ্নটির উত্তর ভিন্ন হয়েছে। অভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে আমি বলেছি: And then some are brought back to their original state as a baby.” They are “reverted” to Islam by the Mercy of Allah.( এবং তাদের মধ্যে কিছু মানুষকে জন্মকালীন তাদের মূল অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া হয়, আল্লাহর বিশেষ করুণায় এরাই হল ইসলামের দিকে প্রত্যাবর্তনকারী
 
আমেরিকান মুসলমানদের সঠিক হিসাব-
কারও কারও দাবি হল, ১১ সেপ্টেম্বর এর পূর্বে আমেরিকায় যে হারে মানুষ ইসলাম গ্রহণ করত  ১১ সেপ্টেম্বর এর পর তা দ্বিগুণ, অথবা তিনগুণ, অথবা চারগু, এমনকী কারও কারও দাবি অনুযায়ী এর থেকেও আরো অধিকগুণে ইসলাম গ্রহণকারীদের সংখ্যা বেড়েছে।
যে যাই বলুক, আসলে কী হারে আমেরিকার নাগরিকরা মুসলমান হচ্ছে তা আমাদের অজানা। আমরা, এমনকী, আমেরিকায় মুসলমানদের সংখ্যা কত, তাই ভাল করে জানি না। আমি তো শুনেছি যে আমেরিকায় মুসলমানদের সংখ্যা ত্রিশ লক্ষ থেকে এক কোটি দশ লক্ষ পর্যন্ত বলা হয়। আমি নিশ্চিত যে -ক্ষেত্রে প্রকৃত সত্য কী তা আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ জানে না।

ইসলাম গ্রহণের আনুপাতিক হার-
বস্তুত সেপ্টেম্বর ঘটনার পূর্বে অথবা পরে সঠিক পরিসংখ্যান কি, তা আমি বলতে পারব না, তবে প্রাজ্ঞ ব্যক্তিদের কথা অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর ঘটনার পূর্বে ইসলাম বিশ্বের সমধিক অগ্রসরমান ধর্ম ছিল। -কথায়ও  সন্দেহ করার মতো যথেষ্ট যুক্তি আমার নেই। আমেরিকার বহু মসজিদসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের বহু মসজিদ ঘুরে দেখার সুযোগ আমার হয়েছে। আমি হাজার হাজার মানুষ পেয়েছি যারা ইসলাম গ্রহণ করেছেন। ইংল্যান্ডের আঙলিকান গির্জা এই বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, যদি কোনো বিষয় ইংল্যান্ডে নও-মুসলিমদের ঝোঁককে পরিবর্তন করে না দেয় তাহলে ২০১০ সাল নাগাত মুসলমানরা আঙলিকান চার্চকে ছাড়িয়ে যাবে। The Anglican Church of England expressed concern that if something does not change in the trend of new Muslims in England that the Muslims will out number the Anglicans by the year 2010.
ইংল্যান্ডের জন্ম নিবন্ধনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নবজাতকদেরকে দেয়া নামের মধ্যে সর্বশীর্ষে জন, অথবা মাইকেল অথবা উইলিয়াম নয়, সর্বশীর্ষ নামটি হল বরংমুহাম্মদ মেক্সিকো, সুইডেন, ডেনমার্ক এবং কানাডায় আমি এত সংখ্যক মানুষকে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিতে দেখেছি যাদেরকে গুনে শেষ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি যেখানেই গিয়েছি, নও মুসলিম পেয়েছি। জেলখানা, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকী সেনাবাহিনীতেও আমি ব্যক্তিগতভাবে হাজার হাজার মানুষ দেখেছি যারা ইসলামকে আপন করে নিয়েছেন। -সবই ছিল সেপ্টেম্বর ঘটনার পূর্বে।
 

ইসলামের বার্তার আরো বেগবান স্পর্শ-
আমি অত্যন্ত তৃপ্তির সাথে বলতে পারি যে, বহু বহু মানুষ, পৃথিবীময়, ইসলামের স্পর্শে আসছে। তারা ইসলামের সঠিক ভাবমূর্তি পাচ্ছে কি পাচ্ছে না, সেটা এই মুহূর্তে আমার কাছে বড় গুরুত্বের বিষয় নয়, বরং আমার কাছে যা অধিক গুরুত্বপূর্ণ তা হল, বহু প্রতীক্ষার পর তারা ইসলামকে দেখছে একটা খুবই বাস্তবধর্মী বিষয় হিসেবে। মানুষ  যখন ইসলাম সম্পর্কে প্রশ্ন করছে, এর অর্থ কিছু তথ্য মানুষের আন্তর অনুভূতিকে অবশ্যই নাড়া দিচ্ছে। যারা ইসলামের বিরুদ্ধে মানুষের অনুভূতিকে জাগিয়ে তুলছে তাদের বিষয়টিও বিবেচনা করার মতো। তবে একই মুহূর্তে আমাদেরকে বুঝতে হবে যে, অনেক মানুষ এমনও আছেন, নিউজ  মিডিয়াতে যা শোনেন, তা  সবসময়ই বিশ্বাস করেন না। এমন মানুষও আছেন যাদেরকে আল্লাহ তাআলা আরো অধিক অনুসন্ধান চালাতে, আরো শিখতে পথ দেখান।
 
আল্লাহ তাআলাই হলেন একমাত্র পথনির্দেশক-
একমাত্র আল্লাহ  তাআলাই মানুষকে হিদায়েত দান করেন এবং একমাত্র তিনিই মানুষকে পথভ্রষ্ট হওয়ার সুযোগ করে দেন। অতীতে সব চেয়ে বড় সমস্যা ছিল ইসলাম সম্পর্কে মানুষের নিরাগ্রহ অতীতে ইসলাম সম্পর্কে কথা  বলতে মানুষ আগ্রহবোধ করত  না, বলা যায় কোনো ধর্মের ব্যাপারেই কথা বলতে আগ্রহবোধ করত  না, এমনকী তাদের নিজেদের ধর্মের ব্যাপারেও না। আর বর্তমানের সমস্যা হল ইসলাম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানের স্বল্পতা। সেখানে আসলে ইসলাম বিষয়ক কোনো কিছু ছিলই না।
এরপর ১৯৭০ সালের ঘটনাসমূহ সামনে এল। যখন ইরানিরা কয়েকটি এরোপ্লেন হাইজ্যাক করল, আর আমরা দেখলাম যে কিছু  মানুষ এরোপ্লেনের বাইরে, জমিনে, সেজদা করছে। আমরা পশ্চিমা বিশ্বের অধিবাসীরা একটি নতুন শব্দ শিখতে পেলাম  শিইজম তথা শিয়া মতবাদ। লোকেরা বলল, এটা আবার কোন ধর্ম  (ইসলাম)? কী হতে যাচ্ছে? এরপর এল ১৯৮০ সাল। -সময় আমরা প্যালেস্টাইনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম দেখতে পেলাম। ঘটনার পর  ফান্ডামেন্টালিস্ট বা মৌলবাদী, মুসলিম শব্দ দুটি একটা আরেকটার সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত হয়ে গেল।
এর ঠিক পরবর্তী সময়েই আমরা ইরাক এবং কুয়েতের ঘটনা  প্রত্যক্ষ করলাম। ইসলামের একটা চিত্র আমাদের সামনে এসে হাজির হল। সুন্দর লাবন্যমাখা চিত্র নয়, বরং একটি ভিন্ন রকম চিত্র। ১৯৯০ সালের মাঝামাঝি আমরা দেখলাম, সমগ্র পৃথিবীতেই একটি বড়  ধরনের একশন শুরু হয়েছে। নিউয়োর্কের ট্রেড সেন্টার, এরোপ্লেন, দূতাবাস ইত্যাদি আক্রমণ করে উড়িয়ে দেয়া। আক্রমণ পাল্টা-আক্রমণ ইত্যাদি। আর এসবের ভিড়ে অহর্নিশি শোনা গেল কয়েকটি শব্দ  ইসলাম  মুসলিম শব্দগুলো শোনা গেল তবে ক্ষীণতম অর্থেও ইতিবাচক আবহ বিচ্ছুরক হিসেবে নয়। তারপর সেপ্টেম্বরে যা ঘটল তা প্রাচ্যের ধর্ম (ইসলাম) সম্পর্কে আরো তথ্য সরবরাহ করল, যদিও তা বিকৃত।

প্রেসিডেন্ট বললেন, ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম [President Says ‘Islam is Peace’]-
প্রতিটি বাড়ি, প্রতিটি ব্যবসাকেন্দ্র, ভূপৃষ্ঠের প্রতিটি জায়গা স্পর্শ পেল ইসলাম নামক একটি শব্দের। ইসলাম তার অস্তিত্বের জানান দিল পৃথিবীময়। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট এমন এক সময় টেলিভিশনের সামনে উপস্থিত হলেন যখন প্রতিটি ব্যক্তিই, যার টেলিভিশন রয়েছে, টেলিভিশনের সামনে এই প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছেন যে, দেখি আমেরিকার সর্বাধিনায়ক ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনা সম্পর্কে কি বলেন। ঘটনা বিষয়ে আমেরিকার পরবর্তী পদক্ষেপই বা  কি হয়। তার বক্তৃতায় অনেক হুমকি-ধমকি ছিল, যারা ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার হুঁশিয়ারি ছিল তবে  এতসব কথার মধ্যে যা   আমার হৃদয়ে গেঁথে যায় তা ছিল, শব্দগুলো, যার মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে, বিশেষ করে, যারা তাদের জীবনে কখনো ইসলামের নামটি পর্যন্ত শোনে নি, তাদের কাছে ইসলামের আওয়াজ পৌঁছে দেয়া।
আমি জ্যোর্জ ডাব্লিউ বুশের যে শব্দগুলো কথা বলছি, তা হল Islam is a religion of peace (ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম) শূন্যে ঘূর্ণায়মান সেটেলাইটের সিগন্যাল পৌঁছে, ভূপৃষ্ঠের এমন কোনো জায়গা বাকি থাকে নি, যা এই বার্তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ভূখণ্ডের প্রতিটি অংশই বরং বার্তা পেয়ে গেছে। যাদের টেলিভিশন  নেই, তারাও যে বঞ্চিত হয়েছে, তা নয়, বরং বিশ্বের সকল রেডিও-স্টেশন থেকেই -বার্তা প্রচার করা হয়েছে যথার্থভাবে জ্যোর্জ ডাব্লিউ বুশের বক্তৃতার সময় যারা ঘুমিয়ে গিয়েছিল, তারাও বার্তাটি থেকে বঞ্চিত হয় নি; কেননা তা পুনঃপ্রচার করা হয়েছে বার বার। যেখানে আদৌ কোনো সম্প্রচার পৌঁছায় না সেখানেও লিখিত শব্দমালার আকারে বার্তাটি পৌঁছে গেছে  মানুষের হাতে হাতে। পৃথিবীর এমন কোনো নিউজ পেপার নেই যা জ্যোর্জ ডাব্লিউ বুশের  উচ্চারিত কথার কিছু না কিছু মানুষের কাছে  পৌঁছে দেয় নি। এটা ছিল একটা ঐতিহাসিক বক্তৃতা। যে বক্তৃতা একদিন ইতিহাসগ্রন্থে স্থান পাবে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একটি জাতির প্রতিশোধ নেয়ার ঘটনার সূচনা হিসেবে।
তিনি বলেছেন,‘ ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম’, আমরা জানি যে মি. বুশ  ইসলামকে  এগিয়ে নেয়ার জন্য কিছু বলবেন তা কল্পনাও করা যায় না। তবে একই মুহূর্তে এমন কথাও তিনি বলতে পারবেন না, যা সকল মুসলমানের আত্মসম্মানে আঘাত করবে, বা তাদের জন্য মর্যাদাহানিকর হবে; কেননা এরূপ করার অর্থ বিশ্বের সকল মুসলমানকেই আমেরিকার বিরুদ্ধে খেপিয়ে তোলা।
বস্তুত এটা আমেরিকানদের স্বার্থের পক্ষে ছিল যে এমন একটি বয়ান ছাড়া হবে যা আফগান পরিস্থিতি এবং পরবর্তীতে যে পরিস্থিতি কায়েম হতে যাচ্ছে  সে বিষয়ে মুসলমানদেরকে বিভক্ত করে ফেলবে। ধরনের বয়ান দিয়ে মি. বুশ দরজা উন্মুক্ত করে রাখলেন সকল মুসলমানদের সামনে যারা পাশ্চাত্যের বস্তুবাদে (যা  তারা ব্যক্তিগতভাবে ভোগ করছে, অথবা ভোগ করতে আগ্রহী) কোনো সমস্যা দেখে না, এবং সমস্ত মুসলমানদের সামনেও যারা পশ্চিমা সমাজের জুলুম অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নিজেকে উৎসর্গ করতে চায়।
অর্থাৎ পলিসিটা ছিল এমন যে কিছু মুসলমানকে কুৎসিত আকারে দেখানো হবে, তবে একই মুহূর্তে ইসলামকে আক্রমণও করা হবে না। আর এটা শয়তানের আরেকটি কাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে সহায়তা করল, আর তা হল: মুসলমানদেরকে বিভক্ত করে পরস্পরকে পরস্পরের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দেয়া। ফলে, বর্তমানে আমরা জাতীয় পরিভাষা শুনতে পাচ্ছি: “mainstream Muslims” (মূল ধারার মুসলমান) “fundamentalist Muslims” (মৌলবাদী মুসলমান),  “terrorist Islam” (সন্ত্রাসী ইসলাম) “modern Islam.” ( আধুনিক ইসলাম) ইত্যাদি। মুসলমানরা এমন কিছু করল যা অমুসলিমরা করতে ব্যর্থ হয়েছে। মুসলমানরা নিজেদেরকে নিজেরা পরাহত করল। আর মুসলমানরা যখন নিজেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে, মুসলমানরা মুসলমানদেরকে হত্যা করে, তখন আল্লাহর প্রতিরক্ষা তাদের উপর থেকে উঠিয়ে নেয়া হয়, ফলে তাদের পরাজয়বরণ অবধারিত হয়ে ওঠে। আর এটাই বর্তমানে বাস্তবতার আকারে দেখা দিয়েছে।
 
মানুষ জানতে আগ্রহী-
তবে, এতসব নেতিবাচক প্রপাগান্ডার মাঝেও, অশুভ সংবাদপত্র সত্ত্বেও অমুসলিম ব্যক্তিরা  ইসলাম বিষয়ে আরো বেশি জানার অনুসন্ধিৎসা লালন করে যেত, মুসলিম সম্প্রদায় এবং এদের বিশ্বাস সম্পর্কে জানার প্রেরণা ধারণ করে বেড়াত। ইসলাম মুসলমান সম্পর্কে বইপুস্তক  প্রকাশের পর পরই বুকশেলফ থেকে ফুরিয়ে যেত। এত দ্রুত ফুরাত যে তার জায়গায় নতুন বই রাখার ফুরসতটুকু পাওয়া যেত না। তবে দূঃখের ব্যাপার হল, প্রতিটি বই হয়ত অমুসলিম কোনো লেখক কর্তৃক রচিত, অথবা গোমরাহ মুসলিম ফেরকার কোনো লেখক কর্তৃক রচিত। যার অর্থ হল মানুষজন তখনো ইসলামের সঠিক বার্তা থেকে  বঞ্চিত ছিল।
ওয়েবসাইট, চেটরুম, মেসেজবোর্ড ইত্যাদি ইসলাম, মুসলমান, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লাম  বিষয়ে শুদ্ধ অশুদ্ধ উভয় প্রকার তথ্যের প্রবাহে জমজমাট হয়ে উঠল। কিছু মানুষ সত্যকে আবিষ্কার করতে উৎসাহী হয়ে উঠল, আর কিছু চাইল সত্যকে গোপন করতে। আর এটাই ছিল ইসলাম বিষয়ক তথ্যের স্পর্শে আসার সর্ববৃহৎ ঘটনা যা পৃথিবীর ইতিহাসে ইতঃপূর্বে কখনো ঘটে নি।
 
মুসলমান অমুসলমানের উন্মুক্ত যোগাযোগ-
ভাল সংবাদটা আসে তখন যখন মুসলিম খৃস্টানদের মধ্যে সংলাপের ঘটনা জায়গা করে নেয়। যখন অমুসলিমরা মসজিদে প্রবেশ করতে শুরু করে, মুসলমানদের সাথে বসতে শুরু করে, একে অন্যের সাথে আলোচনায় অংশ নিতে শুরু করে। একে অন্যের খাবার ঐতিহ্য শেয়ার করতে শুরু করে। -সময়ই আশ্চর্য করে দেবার মতো ঘটনা ঘটতে শুরু করে। তারা তাদের হৃদয় বুদ্ধিকে সত্যের বার্তা গ্রহণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সামনে সত্যিকার অর্থে নত হওয়া, আনুগত্য করার মেসেজের সামনে নিজেদের মেধাবুদ্ধিকে বাধাহীন করে দেয়।
 
ইসলামের দিকে ফিরে আসা-
১১ সেপ্টেম্বর থেকে আমি লক্ষ্য করছি যে, ইসলাম সম্পর্কে জানতে আগ্রহীদের সংখ্যা বিশাল পরিমাণে বেড়ে গেছে। ঠিক একই মুহূর্তে মুসলমানদের পক্ষ থেকে ইসলামের দিকে আহ্বানের আগ্রহ   পরিধিও বেড়ে গেছে দৃষ্টিগ্রাহ্য আকারে। আর এভাবেই মানুষ ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়ে  ধন্য হচ্ছে। ঠিক একই রূপে যেভাবে ঘটেছে দীর্ঘ চৌদ্দশত বছর ধরে। অর্থাৎ ইসলামের সত্যিকার বার্তা শিখে সত্যিকার মুসলমানদের সংস্পর্শে থেকে। যারা জন্মকালীন শিশুতুল্য আনুগত্য আল্লাহর সাথে সম্পর্কের তৃপ্তি পেতে আগ্রহী তারা ইসলামের দিকে ফিরে আসার পথ পাচ্ছে।


বহু নও মুসলিম-
বর্তমান সময়ে, অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় ইসলাম বর্ধিত হচ্ছে অধিক দ্রুততায় এটা হল আল্লাহর ইচ্ছা; কেননা একমাত্র তিনিই হলেন হিদায়েতদাতা মানুষ জানতে চায়; আগ্রহ শানিত; তথ্যও পর্যাপ্ত বিশ্বের বহু ভাষায়। মুসলমানরা বার্তাবাহক হিসেবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে শুরু করেছে। ইসলামের বলয়ে আল্লাহর সাথে তৃপ্তিময় সম্পর্ক কায়েমের বার্তায় অন্যদেরকে শেয়ার করার দায়িত্ব তারা পালন করতে উঠে দাঁড়িয়েছে।
 
প্রতিটি ঘরেই ইসলাম-
এসব তথ্য ঘটনার ভিড়ে একসময় আমার হৃদয়ে শেষনবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি বাণী উঁকি দিয়ে উঠল, আর তা হল:
কেয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না ইসলাম পৃথিবীর প্রতিটি ঘরে প্রবেশ  করবে। চায় সে ঘর পশুর চর্ম দিয়ে তৈরি হোক অথবা মাটি দিয়ে।


http://www.facebook.com/pages/Al-Quran-Modern-Science/140069416050931
http://muslim.zohosites.com/          http://www.quranic-science.blogspot.com 

সমাপ্ত




No comments:

Post a Comment