শাহবাগের মুসলিমদের প্রতি খোলা চিঠিঃ
======================
আসসালামু আলাইকুম,
আপনাকে বলেছিলাম শাহবাগে না যেতে, আপনি শুনলেন না, তেড়ে উঠে বললেন আমি রাজাকার। বিশ্বাস করেন ভাই, রাজাকারদের বাঁচানোর জন্য আমি সেকথা বলি নি, আমি বলেছিলাম শাহবাগের আন্দোলনের নেতৃত্বে যারা আছে, তারা বিকৃত রুচির খারাপ কিছু লোক, বলা যেতে পারে worst of the creation, সৃষ্টির সর্বনিকৃষ্ট। আপনি পাত্তাই দিলেন না, যুক্তি দিলেন, এখন কে ভাল, কে খারাপ, কে ইসলামের শত্রু কে বন্ধু এতকিছু দেখার সময় নেই, সবাই যেহেতু একটা ইস্যুতে একমত হয়েছে কাজেই এখন এদের সাথে এক হয়ে আন্দোলন করতে হবে। আমরা ধারণা করেছিলাম, এদের মূল উদ্দেশ্য যুদ্ধাপরাধের বিচার নয়, এরা এই আন্দোলনের মাধ্যমে একটা প্ল্যাটফর্ম চায় যেখানে বসে গণমানুষের কাছে তাদের আদর্শ প্রচার করবে। আপনি বলতে পারেন আদর্শ প্রচার করলে সমস্যা কি? কিন্তু ভাই, ইসলাম ছাড়া আর কোন আদর্শ বা ধর্ম সত্য নয়, সেগুলোর কাঁধে হাত রাখলে স্ট্রেইট জাহান্নাম, তাই চেয়েছিলাম আপনি এমন কিছুর খপ্পড়ে না পড়েন যাতে করে আপনাকে চিরকাল জাহান্নামে যেতে হয়। বিশ্বাস করেন, আপনি আমার মুসলিম ভাই, আপনার আবেগকে কাজে লাগিয়ে ইসলামের শত্রুরা ব্যবসা করবে সেটা আমরা চাই নি। আপনি তাও গেলেন, আমাদেরকে বলে গেলেন এখানে এই আন্দোলনে ইসলাম বিরোধিতা হতে দেবেন না। কিন্তু আজকে আমরা এটা কি দেখছি? তিন স্তরের বিশিষ্ট নিরাপত্তা বলয়ে নেচে-গেয়ে যে “আন্দোলন” করছেন তার নেতৃত্বে এরা কারা আছে! আছে সেই লোকটা যার ব্লগভর্তি নোংরা আর কুত্সিত সব কথা! আপনি না দেখলে বিশ্বাস করবেন না একজন মানুষ এত জঘন্য হতে পারে। এদের কেউ গালাগালি আর বিশ্রী মন্তব্যের জন্য, কেউ চটি লেখার জন্য, কেউ অশ্লীল জোক লেখার জন্য, আর কেউ বা নগ্নভাবে দালালি করার জন্য বিখ্যাত। ভাই, দুনিয়ায় কি ভাল মানুষের আকাল পড়ছে যে খুঁজে খুঁজে কিছু অমানুষকে ধরে এনে আন্দোলন পরিচালনা করতে হবে? আপনি যতই বলেননা কেন এটা ‘গণমানুষের’ আন্দোলন, এটা
স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে কারা এই আন্দোলনের নেপথ্যে, কারা স্লোগান এর কথাগুলো বলে দিচ্ছে আর কারা সেটা মুখস্থের মত আওড়াচ্ছে, সেটা সুস্পষ্ট। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নেতাদেরকেই দেওয়া হয়। ভেবে দেখেছেন কি, আপনার স্বাধীন বাংলাদেশে যে লোকটা আল্লাহর রাসূল (সাঃ) কে নিয়ে বিকৃত যৌনাচারের কথা বলে বেড়ায়, তার মতো লোককে শাস্তি না দিয়ে দেয়া হচ্ছে নিরাপত্তা? আপনাকে বলা হয়েছিল এ আন্দোলন ইসলামের বিরুদ্ধে পরিচালিত হবে, আপনি জবাবে বলেছিলেন, এটা ইসলামের কোন বিষয় নয়, এটা যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়। আপনি হয়তো মনে করছেন এখানে ইসলামের কোন say নেই, অথচ আপনাদের নাস্তিক নেতারা প্রজন্ম চত্ত্বরে ঠিকই তাদের নাস্তিকতার আদর্শকে প্রচার করে ছেড়েছে। তাদের যে একটা say আছে সেটা তারা আপনাকে যুদ্ধাপরাধের গরম পেয়ালায় করে খাইয়ে দিয়েছে, কিন্তু আপনি ধরতেই পারেননি সেখানে ছিল ধর্মনিরপেক্ষতার বিষ। আপনার ধমনীতে যখন উষ্ণ রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল, তখন আপনি তাদের সাথে গলা মিলিয়ে স্লোগান দিয়েছেন, “ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হোক”। ভাই, আপনি জানেন আপনি কি করেছেন? ইসলামকে কি মনে করেছেন আপনি? Agora শপিং মলের সারি সারি করে সাজিয়ে রাখা প্রোডাক্ট? ইচ্ছা হলে নিলাম বা হলে রেখে দিলাম? নাকি ইসলাম রাতে ঘুমানোর লুংগি, বাসায় পরলাম আর বাইরে যাবার আগে মেঝেতে ছুঁড়ে দিলাম? যে ইসলাম আপনাকে টয়লেট কিভাবে করতে হয় তা শিখিয়ে দেয়, সে ইসলামই আপনাকে শিখাবে কিভাবে রাষ্ট্র চালাতে হবে। আপনি শিখতে না চাইলে, ইসলামসম্মত রাজনীতির কথা মানতে না চাইলে simply আপনি ইসলামের গণ্ডি থেকে বের হয়ে যাবেন। আপনি হয়তো জানেনই না কুর’আনে এরকম কিছু আয়াত আছে,
যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের, ... ফাসেক্ব ... জালেম " [সূরা মায়িদাঃ৪৪,৪৫,৪৭]
না বুঝে স্লোগান দিয়ে থাকলে আল্লাহ আপনাকে মাফ করুন। আপনি ইতিহাস জানেন না, জেনে রাখুন, যেদিন থেকে মুসলিম বিশ্বে ইসলামের শাসন দুর্বল হতে শুরু করে, সেদিন থেকে মুসলিমদের পতনের শুরু। ইসলামের শাসন যখন ছিল তখন আমেরিকা মুসলিমদেরকে কর দিয়ে চলতো, আজ মুসলিম বিশ্বে ইসলামের শাসন নেই, আছে নব্য-ফির’আউন আমেরিকার দাসত্ব। আপনি যতোই ভান করছেন শাহবাগে সবকিছু ঠিক আছে, সবকিছু আসলে ঠিক নেই। আমাদের বাসায় একটা বিড়াল ছিল, তাকে ধরতে গেলে সে কখনো কখনো পালাতে গিয়ে জানালায় ঝোলানো লম্বা পর্দার নীচে নিজেকে লুকাতে চেষ্টা করতো। পর্দার আড়ালে মাথা ঢুকিয়ে সে যখন আমাদেরকে দেখতো না, সে ভাবতো আমরাও বুঝি তাকে দেখছি না, অথচ মাথা ছাড়া তার পুরো শরীরটাই দৃশ্যমান। থাবা বাবাকে “নিষ্পাপ” বানাতে গিয়ে আপনি যেসবের আশ্রয় নিলেন, সেটা বিড়ালের এই স্থূল বুদ্ধি থেকেও বেশি স্থূল। ফেসবুকে, একাধিক ব্লগে থাবা বাবার লেখা অসভ্য সব পোস্ট আর কুত্সিত কলুষিত সব লেখা বের হয়ে যাবার পরেও আপনি খোঁড়া যুক্তি এনে বললেন, এগুলো শিবিরের বানানো। কিছুদিন পর হয়তো বলে বসবেন, নাস্তিকতার ব্যাপারটাও শিবিরের বানানো! কিভাবে পারলেন আপনি? কিভাবে? আপনি কি প্রথম আলোর মত মিথ্যুক? নাকি কালের কণ্ঠের ন্যায় ভন্ড? নাকি আপনি আপনার মাথার মগজটা বন্ধক দিয়েছেন? প্রথম আলো, কালের কণ্ঠ, এরা জারজ - পয়সা খেয়ে মিথ্যার ফেরি করে বেড়ায়, এরা পারে নষ্টামি আর নোংরামিকে ছড়িয়ে দিতে, এরা পারে ফিলিস্তিনে যারা যুদ্ধ করেছে তাদের জংগি বলে আখ্যা দিতে, এরা পারে একটা পরিষ্কার মুরতাদ যে কিনা কোন রাখ-ঢাক ছাড়াই রাসূল (সাঃ) কে নিয়ে যা-তা বলেছে তাকে পাক্কা মু’মিন বানাতে, আপনি একজন মুসলিম হয়ে কিভাবে সেটা পারলেন? আপনি তো একজন মুসলিম, আপনার এতোটুকু লাগলো না? আপনি এতটুকু বোধশক্তিটুকু কাজে লাগাতে ব্যর্থ হলেন? আপনি নিজের চোখে দেখলেন থাবা বাবার একাউন্টে অকথ্য সব কথা, কিন্তু তাও আপনি কার কথা শুনে কী বুঝে তার পক্ষ নিলেন, আপনার লজ্জা করলো না? একটা ছোট ঘটনা বলি, হুদাইবিয়া সন্ধির প্রাক্কালে কুরাইশদের এক নেতা উরওয়া ইবনে মাস’উদ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সাথে বৈঠকে বসেন এবং তার দাঁড়িতে হাত দিতে উদ্যত হল। তত্কালীন আরবে কারো দাঁড়িতে হাত দেয়া কোন বেয়াদবির বিষয় ছিল না, কিন্তু রাসূল (সাঃ) এর কাছে দাড়িয়ে থাকা আপাদমস্তক ঢালে আবৃত থাকা একজন সাহাবী সেটি সহ্য করতে পারলেন না, তিনি তার তলোয়ার দিয়ে উরওয়া ইবনে মাস’উদকে খোঁচা দিয়ে বলেন, “সরিয়ে ফেলো তোমার হাত যদি সেটা অক্ষত রাখতে চাও”। উরওয়া ইবনে মাস’উদ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বলেন, “তোমার এই সাহাবী সবচেয়ে অভদ্র এবং rude”। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হেসে বললেন, “এ হচ্ছে তোমারই ভাতিজা আল-মুগিরাহ ইবনে সুবাহ”। উরওয়া ইবনে মাস’উদ তার ভাতিজার কাছ থেকে এই আচরণ পেয়ে হতচকিত হয়ে পড়লেন, তিনি ভাবতে পারলেন না, রাসূল(সাঃ) এর জন্য তার ভাতিজার টান কতটা বেশি হতে পারে যার জন্য তিনি তার আপন চাচাকে এভাবে হুমকি দিলেন! আর আপনি? পক্ষ নিলেন কার? যে লোকটা আল্লাহরা রাসূল (সাঃ) কে গালি দিল তার? যে বলল আল্লাহর রাসূল (সাঃ) তাহাজ্জুদের নামাযের নাম নিয়ে বের হয়ে যৌনকামনা চরিতার্থ করতেন, সে পশুটার? যে লোকটা বলল, বিবি খাদিজা নাকি রাসূল (সাঃ) এর পেছনে ধাওয়া করতো ইট নিয়ে, আর সেখান থেকে নাকি “ঈদ” শব্দটি এসেছে, সেই কুকুরটার? (নাউযুবিল্লাহ) কিভাবে পারলেন মুসলিম হয়ে? পারতেন যদি কেউ আপনার বাবা-মাকে নিয়ে রসময় গল্প লিখলে তাকে মেনে নিতে? আর যে রাসূল (সাঃ), যিনি আমাদের বাবা-মা পরিবার সবার থেকেও বেশি ভালবাসার দাবি রাখেন, তার অপমানে মুসলিম হয়ে আপনার মাথায় কেন রক্ত উঠে না? শোনেন, আপনি ইসলাম এখনো বোঝেন নাই। বদরের যুদ্ধের পর আবু বকর (রাঃ) এর ছেলে (যিনি বদরের যুদ্ধের পরে মুসলিম হয়েছিলেন), তিনি তার বাবা আবু বকরকে বললেন, “বাবা, আমি তোমাকে বদরের দিনে যুদ্ধের ময়দানে দেখেছি, কিন্তু তাও তোমাকে হত্যা করি নি তুমি আমার বাবা বলে”। আবু বকর (রাঃ) উত্তর দিলেন, “আমি যদি তোমাকে সেদিন দেখতে পেতাম তাহলে তোমাকে ছেড়ে দিতাম না, বরং তোমাকে হত্যা করতাম”। এটাই ইসলাম! বুঝলেন! অন্তরের চোখটা খুলে দেখুন আবু বকর তার নিজের ছেলেকে কি বলছেন ? হ্যাঁ, থাবা বাবাকে যেভাবে হত্যা করে হয়েছে তা আপনি সমর্থন না করতেই পারেন, কিন্তু তাকে আপনি ভালবাসেন কিভাবে? তার প্রতি মমতা দেখান কিভাবে? কিভাবে পারেন তার পক্ষ নিতে? তার মত একটা ক্রিমিন্যালকে গংগার জলে ধুয়ে মুছে সাফ করে নিষ্পাপ করে দিতে হবে কেন? কি লাভ আপনার? জানাযা পড়লে সব হয়ে গেল? আপনি কি জানেন না, যে আবু তালিব ইসলাম গ্রহণ না করে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কে সারাজীবন প্রটেকশন দিয়েও মৃত্যুর পরে রাসূল (সাঃ) এর দু’আ পাননি? যে অপরাধের জন্য কাব ইবনে আশরাফকে হত্যার মিশন কাঁধে নেওয়ার পরে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর সাহাবী মুহাম্মদ বিন মাসায়লামাহ তিন দিন ধরে খেতে পারেননি, ঘুমাতে পারেননি, আর সেই একই অপরাধের দোষে দুষ্ট থাবা বাবার ইমেজ ক্লিন করার যুদ্ধে আপনি নেমে পড়লেন ? মেথররা মানুষের গু পরিষ্কার করে আর আপনি পরিষ্কার করলেন তার থেকেও নোংরা জিনিষ। এক থাবা বাবার মান বাচাঁতে ঝাপিয়ে পড়ে অপমান করলেন লক্ষ শহীদকে। পড়ে থাকলেন সত্যিকার ধর্মব্যবসায়ীদের দলে যারা অনলাইনে ইসলামকে গালি দেয় আর অফলাইনে লোকদেখানো জানাযা পড়ে। আল্লাহর কাছে দু’আ করলেন সেই লোকটির জন্য যে আল্লাহকেই গালি দিয়েছে ! এটা কি মনের বিশালতার পরিচায়ক ? নাকি নীচতা আর ভণ্ডামির ? ফতোয়া-শব্দটা শুনলে এক চোট নেন ফতোয়াবাজদের ওপরে, এদিকে আবার থাবা বাবার মত নিকৃষ্ট জীবকে ডিফেন্ড করতে ঠিকই ফতোয়াবাজি করে বসলেন, “থাবা বাবা নিষ্পাপ, তার সকল অপরাধ খুনীর কাঁধে ট্রান্সফার হয়েছে”। ফতোয়া দিলেন, “থাবা বাবাকে নিয়ে কোন সমালোচনা নয়”, হাসবো না কাদঁবো বুঝতে পারি না, এত্ত lame মানুষ কি করে হয়। আপনি বললেন, “কে নাস্তিক কে আস্তিক, সেটা নিয়ে এত কথার বলার কি দরকার, তা আল্লাহই ভাল জানেন”, তাহলে কে মুক্তিযোদ্ধা আর কে রাজাকার সেটা নিয়ে এত কথা বলছেন কেন !!! থাবা বাবার হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাইলেন, ভালো কথা, প্রতিদিন একটা দুটা শিবির ধরে নাস্তা করতে চাইলেন বিনা বিচারে, এটা কি মুনাফেক্বী হয়ে গেল না? এই আপনি কুর’আনের ৫ নম্বর সূরার ৮ নম্বর আয়াত টেনে আমাদের দিকে আংগুল নির্দেশ করে বললেন, আমরা নাকি বামদলের প্রতি বিদ্বেষবশত এই বিচার হতে দিতে চাই না। আর এই আপনিই তো একই কাজ করলেন, জামাত-শিবিরের প্রতি পাইকারী রেটে ঘৃণার মদ খেয়ে মাতাল হয়ে তাদেরকে জবাই করার স্লোগান দিলেন তালে তালে, এই কি তবে আপনার ন্যায়বিচার? একটা কথা বলি, কিছু মনে করবেন না, যতোই গালিগালাজ করেন না কেন, আপনার সাথেই জামাত-শিবিরের মিল আছে। তারা যেমন যে-কোন-পন্থায় ইসলাম কায়েম করতে মাইন্ড করে না, তেমনি যে-কোন-রকমে-যেন-তেন বিচার হয়ে ফাঁসির রায় হলেই আপনি খুশি। তারা যেমন “বৃহত্তর স্বার্থ” এর দোহাই দিয়ে নারী নেতৃত্বকে মেনে নেয়, তেমনি আপনিও সেই একই “বৃহত্তর স্বার্থের” যুক্তিতে ইসলাম বিদ্বেষী এক জঘন্য গোষ্ঠীর নেতৃত্ব মেনে নিয়েছেন। ইসলামে “বায়্যিনাহ” বলে একটা টার্ম আছে, যার মানে হচ্ছে সত্য আসার পর সুস্পষ্ট বিভক্তি। আলহামদুলিল্লাহ, বাংলাদেশে সেই বিভক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে, এটা আল্লাহর বেঁধে দেওয়া চিরাচরিত নিয়মের অংশ। এতদিন মুসলিম-মুনাফিক্ব-কাফির সবাই এক হয়ে ছিল, এখন থেকে ইনশা আল্লাহ আর নয়। শাহবাগে কে নেতৃত্বে আছে, তারা কি চায় সেটা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে। কিছুদিন আগেই শাহবাগের নেতৃত্বশীল কেউ ফেসবুকে তার মনোবাসনার কথা চেপে রাখতে পেরে প্রকাশ করে দিয়েছে, “ধর্মশিক্ষা ঐচ্ছিকরণ এবং পাঠ্যবই থেকে ইছলামী গুণগানমূলক অধ্যায়গুলির অবিলম্বে বাতিলকরণ”, অতি চালাকের কেউ তাতে মন্তব্য করেছে, “এইসব যোগ করলে ঝামেলা আরও বাড়তে পারে। এইগুলা নিয়ে ওরা ইস্যু বানিয়ে বসবে। যা হোক। ধীরে ধীরে সবই হবে। আন্দোলনটা আরেকটু বেগবান হোক”। সরকার আজকে ইসলামবিদ্বেষী কুকুরকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা দিচ্ছে। গতকাল খেলাফত মজলিশের মিছিলে পুলিশ গুলি করেছে যারা ইসলামের বিদ্রুপকারিদের শাস্তির দাবি করেছিল মাত্র। আর আপনাকে সেই পুলিশ নিরাপত্তা দিচ্ছে আন্দোলন চালিয়ে নেবার। ভেবে নিন কাদের সাথে থাকবেন। শাহবাগ এখন আর যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে সীমাবদ্ধ নেই, এটা পরিণত হয়েছে এক আদর্শিক দ্বন্দ্বের প্রতীক রূপে। আপনাকে ঠিক করতে হবে আপনি কোন পক্ষ নেবেন। আপনি যদি শাহবাগে থাকার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন, তা হলে আমি কিছুই বলবো না, শুধু একটি কুর’আনের আয়াত জানিয়ে দেয়াটা আমার দায়িত্ব। যখন আল্লাহ তা’ আলার আয়াতসমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রুপ হতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গান্তরে চলে যায়। তা না হলে তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ দোযখের মাঝে মুনাফেক ও কাফেরদেরকে একই জায়গায় সমবেত করবেন। [সূরা নিসাঃ১৪০] Be Careful ! আল্লাহ কি বলছেন সেটা খেয়াল করুন, আপনি আসিফ মহীউদ্দিনদের সাথে থাকবেন, তাদের মতো হয়ে যাবেন। সময় থাকতে কেটে পড়ুন, পরিত্যাগ করুন এসব নাপাক নাস্তিকদের। এদেরকে যতোই শহীদ, বীর হিসেবে আখ্যা দেওয়া হোক না কেন, গু থেকে দুর্গন্ধই ছড়াবে, গু থেকে দুর্গন্ধ ছড়াবেই। আপনি যতই ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে নিজেকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করুন না কেন, কুর’আনের ভাষা সুস্পষ্ট। তিনি বলে দিয়েছেন কারা “আমাদের” অন্তর্ভূক্ত, আর কারা “ওদের”। আপনি হয়তো জানেনই না কুর’আনে এরকম একটি নয়, একাধিক আয়াত আছে !
যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তাদেরকে আপনি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচরণকারীদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখবেন না, যদিও তারা তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়। [সূরা মুজাদালাহঃ২২] আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন, আল্লাহ এবং রাসূল (সাঃ) এর প্রতি যদি আপনার নূন্যতম ভালবাসা থেকে থাকে, ইসলামের প্রতি যদি আপনার সামান্যতম protective jealousy থেকে থাকে, তাহলে রুখে দাঁড়ান ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে। আদর্শিক দ্বন্বের এই যুদ্ধে ইসলামের পক্ষ নিন, বিজয় ইসলাম এবং মুসলিমদেরই হবে, এটাই আল্লাহর ওয়াদা।
বলুনঃ সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। [সূরা বনী-ঈসরাইলঃ৮১]
আসসালামু আলাইকুম,
আপনাকে বলেছিলাম শাহবাগে না যেতে, আপনি শুনলেন না, তেড়ে উঠে বললেন আমি রাজাকার। বিশ্বাস করেন ভাই, রাজাকারদের বাঁচানোর জন্য আমি সেকথা বলি নি, আমি বলেছিলাম শাহবাগের আন্দোলনের নেতৃত্বে যারা আছে, তারা বিকৃত রুচির খারাপ কিছু লোক, বলা যেতে পারে worst of the creation, সৃষ্টির সর্বনিকৃষ্ট। আপনি পাত্তাই দিলেন না, যুক্তি দিলেন, এখন কে ভাল, কে খারাপ, কে ইসলামের শত্রু কে বন্ধু এতকিছু দেখার সময় নেই, সবাই যেহেতু একটা ইস্যুতে একমত হয়েছে কাজেই এখন এদের সাথে এক হয়ে আন্দোলন করতে হবে। আমরা ধারণা করেছিলাম, এদের মূল উদ্দেশ্য যুদ্ধাপরাধের বিচার নয়, এরা এই আন্দোলনের মাধ্যমে একটা প্ল্যাটফর্ম চায় যেখানে বসে গণমানুষের কাছে তাদের আদর্শ প্রচার করবে। আপনি বলতে পারেন আদর্শ প্রচার করলে সমস্যা কি? কিন্তু ভাই, ইসলাম ছাড়া আর কোন আদর্শ বা ধর্ম সত্য নয়, সেগুলোর কাঁধে হাত রাখলে স্ট্রেইট জাহান্নাম, তাই চেয়েছিলাম আপনি এমন কিছুর খপ্পড়ে না পড়েন যাতে করে আপনাকে চিরকাল জাহান্নামে যেতে হয়। বিশ্বাস করেন, আপনি আমার মুসলিম ভাই, আপনার আবেগকে কাজে লাগিয়ে ইসলামের শত্রুরা ব্যবসা করবে সেটা আমরা চাই নি। আপনি তাও গেলেন, আমাদেরকে বলে গেলেন এখানে এই আন্দোলনে ইসলাম বিরোধিতা হতে দেবেন না। কিন্তু আজকে আমরা এটা কি দেখছি? তিন স্তরের বিশিষ্ট নিরাপত্তা বলয়ে নেচে-গেয়ে যে “আন্দোলন” করছেন তার নেতৃত্বে এরা কারা আছে! আছে সেই লোকটা যার ব্লগভর্তি নোংরা আর কুত্সিত সব কথা! আপনি না দেখলে বিশ্বাস করবেন না একজন মানুষ এত জঘন্য হতে পারে। এদের কেউ গালাগালি আর বিশ্রী মন্তব্যের জন্য, কেউ চটি লেখার জন্য, কেউ অশ্লীল জোক লেখার জন্য, আর কেউ বা নগ্নভাবে দালালি করার জন্য বিখ্যাত। ভাই, দুনিয়ায় কি ভাল মানুষের আকাল পড়ছে যে খুঁজে খুঁজে কিছু অমানুষকে ধরে এনে আন্দোলন পরিচালনা করতে হবে? আপনি যতই বলেননা কেন এটা ‘গণমানুষের’ আন্দোলন, এটা
স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে কারা এই আন্দোলনের নেপথ্যে, কারা স্লোগান এর কথাগুলো বলে দিচ্ছে আর কারা সেটা মুখস্থের মত আওড়াচ্ছে, সেটা সুস্পষ্ট। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নেতাদেরকেই দেওয়া হয়। ভেবে দেখেছেন কি, আপনার স্বাধীন বাংলাদেশে যে লোকটা আল্লাহর রাসূল (সাঃ) কে নিয়ে বিকৃত যৌনাচারের কথা বলে বেড়ায়, তার মতো লোককে শাস্তি না দিয়ে দেয়া হচ্ছে নিরাপত্তা? আপনাকে বলা হয়েছিল এ আন্দোলন ইসলামের বিরুদ্ধে পরিচালিত হবে, আপনি জবাবে বলেছিলেন, এটা ইসলামের কোন বিষয় নয়, এটা যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়। আপনি হয়তো মনে করছেন এখানে ইসলামের কোন say নেই, অথচ আপনাদের নাস্তিক নেতারা প্রজন্ম চত্ত্বরে ঠিকই তাদের নাস্তিকতার আদর্শকে প্রচার করে ছেড়েছে। তাদের যে একটা say আছে সেটা তারা আপনাকে যুদ্ধাপরাধের গরম পেয়ালায় করে খাইয়ে দিয়েছে, কিন্তু আপনি ধরতেই পারেননি সেখানে ছিল ধর্মনিরপেক্ষতার বিষ। আপনার ধমনীতে যখন উষ্ণ রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল, তখন আপনি তাদের সাথে গলা মিলিয়ে স্লোগান দিয়েছেন, “ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হোক”। ভাই, আপনি জানেন আপনি কি করেছেন? ইসলামকে কি মনে করেছেন আপনি? Agora শপিং মলের সারি সারি করে সাজিয়ে রাখা প্রোডাক্ট? ইচ্ছা হলে নিলাম বা হলে রেখে দিলাম? নাকি ইসলাম রাতে ঘুমানোর লুংগি, বাসায় পরলাম আর বাইরে যাবার আগে মেঝেতে ছুঁড়ে দিলাম? যে ইসলাম আপনাকে টয়লেট কিভাবে করতে হয় তা শিখিয়ে দেয়, সে ইসলামই আপনাকে শিখাবে কিভাবে রাষ্ট্র চালাতে হবে। আপনি শিখতে না চাইলে, ইসলামসম্মত রাজনীতির কথা মানতে না চাইলে simply আপনি ইসলামের গণ্ডি থেকে বের হয়ে যাবেন। আপনি হয়তো জানেনই না কুর’আনে এরকম কিছু আয়াত আছে,
যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের, ... ফাসেক্ব ... জালেম " [সূরা মায়িদাঃ৪৪,৪৫,৪৭]
না বুঝে স্লোগান দিয়ে থাকলে আল্লাহ আপনাকে মাফ করুন। আপনি ইতিহাস জানেন না, জেনে রাখুন, যেদিন থেকে মুসলিম বিশ্বে ইসলামের শাসন দুর্বল হতে শুরু করে, সেদিন থেকে মুসলিমদের পতনের শুরু। ইসলামের শাসন যখন ছিল তখন আমেরিকা মুসলিমদেরকে কর দিয়ে চলতো, আজ মুসলিম বিশ্বে ইসলামের শাসন নেই, আছে নব্য-ফির’আউন আমেরিকার দাসত্ব। আপনি যতোই ভান করছেন শাহবাগে সবকিছু ঠিক আছে, সবকিছু আসলে ঠিক নেই। আমাদের বাসায় একটা বিড়াল ছিল, তাকে ধরতে গেলে সে কখনো কখনো পালাতে গিয়ে জানালায় ঝোলানো লম্বা পর্দার নীচে নিজেকে লুকাতে চেষ্টা করতো। পর্দার আড়ালে মাথা ঢুকিয়ে সে যখন আমাদেরকে দেখতো না, সে ভাবতো আমরাও বুঝি তাকে দেখছি না, অথচ মাথা ছাড়া তার পুরো শরীরটাই দৃশ্যমান। থাবা বাবাকে “নিষ্পাপ” বানাতে গিয়ে আপনি যেসবের আশ্রয় নিলেন, সেটা বিড়ালের এই স্থূল বুদ্ধি থেকেও বেশি স্থূল। ফেসবুকে, একাধিক ব্লগে থাবা বাবার লেখা অসভ্য সব পোস্ট আর কুত্সিত কলুষিত সব লেখা বের হয়ে যাবার পরেও আপনি খোঁড়া যুক্তি এনে বললেন, এগুলো শিবিরের বানানো। কিছুদিন পর হয়তো বলে বসবেন, নাস্তিকতার ব্যাপারটাও শিবিরের বানানো! কিভাবে পারলেন আপনি? কিভাবে? আপনি কি প্রথম আলোর মত মিথ্যুক? নাকি কালের কণ্ঠের ন্যায় ভন্ড? নাকি আপনি আপনার মাথার মগজটা বন্ধক দিয়েছেন? প্রথম আলো, কালের কণ্ঠ, এরা জারজ - পয়সা খেয়ে মিথ্যার ফেরি করে বেড়ায়, এরা পারে নষ্টামি আর নোংরামিকে ছড়িয়ে দিতে, এরা পারে ফিলিস্তিনে যারা যুদ্ধ করেছে তাদের জংগি বলে আখ্যা দিতে, এরা পারে একটা পরিষ্কার মুরতাদ যে কিনা কোন রাখ-ঢাক ছাড়াই রাসূল (সাঃ) কে নিয়ে যা-তা বলেছে তাকে পাক্কা মু’মিন বানাতে, আপনি একজন মুসলিম হয়ে কিভাবে সেটা পারলেন? আপনি তো একজন মুসলিম, আপনার এতোটুকু লাগলো না? আপনি এতটুকু বোধশক্তিটুকু কাজে লাগাতে ব্যর্থ হলেন? আপনি নিজের চোখে দেখলেন থাবা বাবার একাউন্টে অকথ্য সব কথা, কিন্তু তাও আপনি কার কথা শুনে কী বুঝে তার পক্ষ নিলেন, আপনার লজ্জা করলো না? একটা ছোট ঘটনা বলি, হুদাইবিয়া সন্ধির প্রাক্কালে কুরাইশদের এক নেতা উরওয়া ইবনে মাস’উদ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সাথে বৈঠকে বসেন এবং তার দাঁড়িতে হাত দিতে উদ্যত হল। তত্কালীন আরবে কারো দাঁড়িতে হাত দেয়া কোন বেয়াদবির বিষয় ছিল না, কিন্তু রাসূল (সাঃ) এর কাছে দাড়িয়ে থাকা আপাদমস্তক ঢালে আবৃত থাকা একজন সাহাবী সেটি সহ্য করতে পারলেন না, তিনি তার তলোয়ার দিয়ে উরওয়া ইবনে মাস’উদকে খোঁচা দিয়ে বলেন, “সরিয়ে ফেলো তোমার হাত যদি সেটা অক্ষত রাখতে চাও”। উরওয়া ইবনে মাস’উদ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বলেন, “তোমার এই সাহাবী সবচেয়ে অভদ্র এবং rude”। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হেসে বললেন, “এ হচ্ছে তোমারই ভাতিজা আল-মুগিরাহ ইবনে সুবাহ”। উরওয়া ইবনে মাস’উদ তার ভাতিজার কাছ থেকে এই আচরণ পেয়ে হতচকিত হয়ে পড়লেন, তিনি ভাবতে পারলেন না, রাসূল(সাঃ) এর জন্য তার ভাতিজার টান কতটা বেশি হতে পারে যার জন্য তিনি তার আপন চাচাকে এভাবে হুমকি দিলেন! আর আপনি? পক্ষ নিলেন কার? যে লোকটা আল্লাহরা রাসূল (সাঃ) কে গালি দিল তার? যে বলল আল্লাহর রাসূল (সাঃ) তাহাজ্জুদের নামাযের নাম নিয়ে বের হয়ে যৌনকামনা চরিতার্থ করতেন, সে পশুটার? যে লোকটা বলল, বিবি খাদিজা নাকি রাসূল (সাঃ) এর পেছনে ধাওয়া করতো ইট নিয়ে, আর সেখান থেকে নাকি “ঈদ” শব্দটি এসেছে, সেই কুকুরটার? (নাউযুবিল্লাহ) কিভাবে পারলেন মুসলিম হয়ে? পারতেন যদি কেউ আপনার বাবা-মাকে নিয়ে রসময় গল্প লিখলে তাকে মেনে নিতে? আর যে রাসূল (সাঃ), যিনি আমাদের বাবা-মা পরিবার সবার থেকেও বেশি ভালবাসার দাবি রাখেন, তার অপমানে মুসলিম হয়ে আপনার মাথায় কেন রক্ত উঠে না? শোনেন, আপনি ইসলাম এখনো বোঝেন নাই। বদরের যুদ্ধের পর আবু বকর (রাঃ) এর ছেলে (যিনি বদরের যুদ্ধের পরে মুসলিম হয়েছিলেন), তিনি তার বাবা আবু বকরকে বললেন, “বাবা, আমি তোমাকে বদরের দিনে যুদ্ধের ময়দানে দেখেছি, কিন্তু তাও তোমাকে হত্যা করি নি তুমি আমার বাবা বলে”। আবু বকর (রাঃ) উত্তর দিলেন, “আমি যদি তোমাকে সেদিন দেখতে পেতাম তাহলে তোমাকে ছেড়ে দিতাম না, বরং তোমাকে হত্যা করতাম”। এটাই ইসলাম! বুঝলেন! অন্তরের চোখটা খুলে দেখুন আবু বকর তার নিজের ছেলেকে কি বলছেন ? হ্যাঁ, থাবা বাবাকে যেভাবে হত্যা করে হয়েছে তা আপনি সমর্থন না করতেই পারেন, কিন্তু তাকে আপনি ভালবাসেন কিভাবে? তার প্রতি মমতা দেখান কিভাবে? কিভাবে পারেন তার পক্ষ নিতে? তার মত একটা ক্রিমিন্যালকে গংগার জলে ধুয়ে মুছে সাফ করে নিষ্পাপ করে দিতে হবে কেন? কি লাভ আপনার? জানাযা পড়লে সব হয়ে গেল? আপনি কি জানেন না, যে আবু তালিব ইসলাম গ্রহণ না করে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কে সারাজীবন প্রটেকশন দিয়েও মৃত্যুর পরে রাসূল (সাঃ) এর দু’আ পাননি? যে অপরাধের জন্য কাব ইবনে আশরাফকে হত্যার মিশন কাঁধে নেওয়ার পরে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর সাহাবী মুহাম্মদ বিন মাসায়লামাহ তিন দিন ধরে খেতে পারেননি, ঘুমাতে পারেননি, আর সেই একই অপরাধের দোষে দুষ্ট থাবা বাবার ইমেজ ক্লিন করার যুদ্ধে আপনি নেমে পড়লেন ? মেথররা মানুষের গু পরিষ্কার করে আর আপনি পরিষ্কার করলেন তার থেকেও নোংরা জিনিষ। এক থাবা বাবার মান বাচাঁতে ঝাপিয়ে পড়ে অপমান করলেন লক্ষ শহীদকে। পড়ে থাকলেন সত্যিকার ধর্মব্যবসায়ীদের দলে যারা অনলাইনে ইসলামকে গালি দেয় আর অফলাইনে লোকদেখানো জানাযা পড়ে। আল্লাহর কাছে দু’আ করলেন সেই লোকটির জন্য যে আল্লাহকেই গালি দিয়েছে ! এটা কি মনের বিশালতার পরিচায়ক ? নাকি নীচতা আর ভণ্ডামির ? ফতোয়া-শব্দটা শুনলে এক চোট নেন ফতোয়াবাজদের ওপরে, এদিকে আবার থাবা বাবার মত নিকৃষ্ট জীবকে ডিফেন্ড করতে ঠিকই ফতোয়াবাজি করে বসলেন, “থাবা বাবা নিষ্পাপ, তার সকল অপরাধ খুনীর কাঁধে ট্রান্সফার হয়েছে”। ফতোয়া দিলেন, “থাবা বাবাকে নিয়ে কোন সমালোচনা নয়”, হাসবো না কাদঁবো বুঝতে পারি না, এত্ত lame মানুষ কি করে হয়। আপনি বললেন, “কে নাস্তিক কে আস্তিক, সেটা নিয়ে এত কথার বলার কি দরকার, তা আল্লাহই ভাল জানেন”, তাহলে কে মুক্তিযোদ্ধা আর কে রাজাকার সেটা নিয়ে এত কথা বলছেন কেন !!! থাবা বাবার হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাইলেন, ভালো কথা, প্রতিদিন একটা দুটা শিবির ধরে নাস্তা করতে চাইলেন বিনা বিচারে, এটা কি মুনাফেক্বী হয়ে গেল না? এই আপনি কুর’আনের ৫ নম্বর সূরার ৮ নম্বর আয়াত টেনে আমাদের দিকে আংগুল নির্দেশ করে বললেন, আমরা নাকি বামদলের প্রতি বিদ্বেষবশত এই বিচার হতে দিতে চাই না। আর এই আপনিই তো একই কাজ করলেন, জামাত-শিবিরের প্রতি পাইকারী রেটে ঘৃণার মদ খেয়ে মাতাল হয়ে তাদেরকে জবাই করার স্লোগান দিলেন তালে তালে, এই কি তবে আপনার ন্যায়বিচার? একটা কথা বলি, কিছু মনে করবেন না, যতোই গালিগালাজ করেন না কেন, আপনার সাথেই জামাত-শিবিরের মিল আছে। তারা যেমন যে-কোন-পন্থায় ইসলাম কায়েম করতে মাইন্ড করে না, তেমনি যে-কোন-রকমে-যেন-তেন বিচার হয়ে ফাঁসির রায় হলেই আপনি খুশি। তারা যেমন “বৃহত্তর স্বার্থ” এর দোহাই দিয়ে নারী নেতৃত্বকে মেনে নেয়, তেমনি আপনিও সেই একই “বৃহত্তর স্বার্থের” যুক্তিতে ইসলাম বিদ্বেষী এক জঘন্য গোষ্ঠীর নেতৃত্ব মেনে নিয়েছেন। ইসলামে “বায়্যিনাহ” বলে একটা টার্ম আছে, যার মানে হচ্ছে সত্য আসার পর সুস্পষ্ট বিভক্তি। আলহামদুলিল্লাহ, বাংলাদেশে সেই বিভক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে, এটা আল্লাহর বেঁধে দেওয়া চিরাচরিত নিয়মের অংশ। এতদিন মুসলিম-মুনাফিক্ব-কাফির সবাই এক হয়ে ছিল, এখন থেকে ইনশা আল্লাহ আর নয়। শাহবাগে কে নেতৃত্বে আছে, তারা কি চায় সেটা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে। কিছুদিন আগেই শাহবাগের নেতৃত্বশীল কেউ ফেসবুকে তার মনোবাসনার কথা চেপে রাখতে পেরে প্রকাশ করে দিয়েছে, “ধর্মশিক্ষা ঐচ্ছিকরণ এবং পাঠ্যবই থেকে ইছলামী গুণগানমূলক অধ্যায়গুলির অবিলম্বে বাতিলকরণ”, অতি চালাকের কেউ তাতে মন্তব্য করেছে, “এইসব যোগ করলে ঝামেলা আরও বাড়তে পারে। এইগুলা নিয়ে ওরা ইস্যু বানিয়ে বসবে। যা হোক। ধীরে ধীরে সবই হবে। আন্দোলনটা আরেকটু বেগবান হোক”। সরকার আজকে ইসলামবিদ্বেষী কুকুরকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা দিচ্ছে। গতকাল খেলাফত মজলিশের মিছিলে পুলিশ গুলি করেছে যারা ইসলামের বিদ্রুপকারিদের শাস্তির দাবি করেছিল মাত্র। আর আপনাকে সেই পুলিশ নিরাপত্তা দিচ্ছে আন্দোলন চালিয়ে নেবার। ভেবে নিন কাদের সাথে থাকবেন। শাহবাগ এখন আর যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে সীমাবদ্ধ নেই, এটা পরিণত হয়েছে এক আদর্শিক দ্বন্দ্বের প্রতীক রূপে। আপনাকে ঠিক করতে হবে আপনি কোন পক্ষ নেবেন। আপনি যদি শাহবাগে থাকার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন, তা হলে আমি কিছুই বলবো না, শুধু একটি কুর’আনের আয়াত জানিয়ে দেয়াটা আমার দায়িত্ব। যখন আল্লাহ তা’ আলার আয়াতসমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রুপ হতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গান্তরে চলে যায়। তা না হলে তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ দোযখের মাঝে মুনাফেক ও কাফেরদেরকে একই জায়গায় সমবেত করবেন। [সূরা নিসাঃ১৪০] Be Careful ! আল্লাহ কি বলছেন সেটা খেয়াল করুন, আপনি আসিফ মহীউদ্দিনদের সাথে থাকবেন, তাদের মতো হয়ে যাবেন। সময় থাকতে কেটে পড়ুন, পরিত্যাগ করুন এসব নাপাক নাস্তিকদের। এদেরকে যতোই শহীদ, বীর হিসেবে আখ্যা দেওয়া হোক না কেন, গু থেকে দুর্গন্ধই ছড়াবে, গু থেকে দুর্গন্ধ ছড়াবেই। আপনি যতই ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে নিজেকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করুন না কেন, কুর’আনের ভাষা সুস্পষ্ট। তিনি বলে দিয়েছেন কারা “আমাদের” অন্তর্ভূক্ত, আর কারা “ওদের”। আপনি হয়তো জানেনই না কুর’আনে এরকম একটি নয়, একাধিক আয়াত আছে !
যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তাদেরকে আপনি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচরণকারীদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখবেন না, যদিও তারা তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়। [সূরা মুজাদালাহঃ২২] আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন, আল্লাহ এবং রাসূল (সাঃ) এর প্রতি যদি আপনার নূন্যতম ভালবাসা থেকে থাকে, ইসলামের প্রতি যদি আপনার সামান্যতম protective jealousy থেকে থাকে, তাহলে রুখে দাঁড়ান ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে। আদর্শিক দ্বন্বের এই যুদ্ধে ইসলামের পক্ষ নিন, বিজয় ইসলাম এবং মুসলিমদেরই হবে, এটাই আল্লাহর ওয়াদা।
বলুনঃ সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। [সূরা বনী-ঈসরাইলঃ৮১]
No comments:
Post a Comment